মুম্বইয়ের ঠাকুর কলেজ। — ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ের ঠাকুর কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড কমার্সে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা পীযূষ গয়ালের ছেলে ধ্রুবের অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে। শুক্রবার আয়োজিত হওয়া ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে কলেজের পড়ুয়াদের আই কার্ড বাজেয়াপ্ত করে রাখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। যাতে কেউ ওই অনুষ্ঠানে গরহাজির না থাকতে পারেন, তাই এই পদক্ষেপ বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। তা নিয়েই এখন তোলপাড় সমাজমাধ্যমে।
ভোটদান কেন জরুরি? প্রথম বার ভোট দিচ্ছে এমন পড়ুয়াদের ভোটদানের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গত শুক্রবার কান্দিভিলির ঠাকুর কলেজে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন মন্ত্রী পুত্র ধ্রুব। তাতে পড়ুয়ারা যাতে হাজির থাকেন, সে জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের আই কার্ড বাজেয়াপ্ত করে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। পরীক্ষা চলাকালীন বিজেপি নেতার ছেলের অনুষ্ঠানের জন্য এই ধরনের ফতোয়ার সমালোচনা শুরু হয়েছে চারদিকে। সেই অনুষ্ঠানের একাধিক ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, পড়ুয়ারা মঞ্চে উপবিষ্ট ধ্রুবকেই সরাসরি প্রশ্ন করছেন, কেন পরীক্ষার মধ্যে তাঁদের এ ভাবে আনা হল? তবে এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের প্রশ্নে বিদ্ধ হয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষও।
একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে যে, ধ্রুবকে এক কলেজপড়ুয়া প্রশ্ন করছেন, ‘‘অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করতে ঠাকুর কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের সবার আই কার্ড বাজেয়াপ্ত করে নিলেন, এটা কতটা গণতান্ত্রিক বলে মনে করছেন?’’ আবার অন্য একটি ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, কলেজের প্রিন্সিপাল চৈতালি চক্রবর্তী সেই মঞ্চেই দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছেন। তাঁর কথায় এসেছিল পরীক্ষার প্রসঙ্গও। পরবর্তী কালে প্রিন্সিপালের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীরা বিজেপিকে চেপে ধরেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলে বলেই কি তিনি নিজের ইচ্ছেমতো কলেজ কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে পারেন, তার উপর যখন পরীক্ষা চলছে! যদিও বিজেপির সাফাই, নির্বাচন কমিশনই প্রথম বার ভোটদাতাদের সচেতন করতে বিভিন্ন কলেজে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ঠাকুর কলেজেও তেমনই হয়েছে। তবে আই কার্ড বাজেয়াপ্ত করে পড়ুয়াদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে তাদের কিছুই জানা নেই বলে দাবি করেছে পদ্মশিবির। এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি কলেজের প্রিন্সিপালেরও।