হিংস্র পিটবুলের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত ১২ জন। ফাইল ছবি।
পঞ্জাবের গুরদাসপুরের তাঙ্গো শাহ গ্রাম থেকে ছুহন গ্রাম। দূরত্ব অন্তত ১৫ কিলোমিটার। এই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াল একটি পিটবুল। তার আঁচড়ে-কামড়ে ক্ষতবিক্ষত অন্তত ১২ জন। শেষ পর্যন্ত এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী পিটবুলের থাবা থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে মেরে ফেললেন আচমকা হিংস্র হয়ে ওঠা প্রাণীটিকে।
পিটবুলটি প্রথমে তাঙ্গো শাহ গ্রামে দুই শ্রমিকের উপর হামলা করে। দু’জনেই কুকুরটির গলায় চেন পরিয়ে নিজেদের বাঁচান। কিন্তু কোনও ভাবে চেন খুলে বেরিয়ে আসে পিটবুল। ঢুকে পড়ে গ্রামের ভিতরে। তার পর পিটবুল হামলা চালায় ৬০ বছরের দিলীপ কুমারের উপর। তিনি নিজের বাড়ির দাওয়ায় বসেছিলেন। পিটবুলটি দিলীপের টুঁটি কামড়ে কিছু দূর নিয়ে যায়। লোকজন ছুটে এলে রক্তাক্ত অবস্থায় দিলীপকে ফেলে আবার দৌড়।
এর পর পিটবুলটি কামড়ে দেয় বলদেব রাজের পায়ে। সেখানেও লোকজন ছুটে এলে পালায় কুকুরটি। দৌড়তে দৌড়তে তা পৌঁছয় একটি ইটভাটায়। পথে একাধিক গৃহপালিত পশুকেও আক্রমণ করেছে পিটবুলটি। ইটভাটার নিরাপত্তারক্ষী রামনাথ, পিটবুলের পরবর্তী আক্রমণের লক্ষ্য হয়। দুটি রাস্তার কুকুর তাঁর প্রাণ বাঁচায়। তাড়া খেয়ে পিটবুলটি দৌড় লাগায় ছান্নি গ্রামের দিকে। সেখানে একটি দাওয়ায় শুয়ে ঘুমোচ্ছিলেন মঙ্গল সিংহ। ঘুমের মধ্যেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুরটি। লোকজন ছুটে আসতেই আবার ছুট! ভোর ৫টা নাগাদ পিটবুলটি অন্য একটি গ্রামে পৌঁছয় এবং কয়েক জন প্রাতর্ভ্রমণকারীকে আঁচড়ে-কামড়ে দেয়।
এরই মধ্যে পিটবুল পৌঁছে যায় ছুহনে। সেখানে প্রাতর্ভ্রমণ করছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ক্যাপ্টেন শক্তি সিংহ। কুকুরটি তাঁর হাতে কামড়ে দেয়। শক্তি এর পর দু’হাতে হিংস্র পিটবুলটির দুটি কান ধরে থাকেন। তত ক্ষণে আরও লোকজন জমা হয়েছে মাঠে। সবাই মিলে পিটিয়ে পিটবুলটিকে মেরে ফেলেন।
আহত ব্যক্তিদের দিনানগর এবং গুরদাসপুর সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। গত কয়েক মাসে উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পিটবুলের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন অনেকে। ক্রমাগত বেড়ে চলা পিটবুলের হামলার জেরে কানপুর শহরের মধ্যে পিটবুল ও রটওয়েলার প্রজাতির কুকুর রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু গুরদাসপুরের পিটবুলটি কেন আচমকা এমন হিংস্র হয়ে উঠল তা এখনও জানা যায়নি।