লোকসভা ভোটের প্রচারে ‘গোলাপি বিপ্লব’-এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এখন তাঁর আমলেই ‘গোলাপি বিপ্লব’ আরও বেশি ডালপালা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কী এই ‘গোলাপি বিপ্লব’?
লোকসভা ভোটের আগে মোদী বলেছিলেন, ‘‘পশু কাটা হলে তার গোলাপি মাংস দেখা যায়। দেশের সবুজ বিপ্লব দরকার ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার গোলাপি বিপ্লব চাইছে। কেউ গরু পুষলে তাঁকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় না। কিন্তু কসাইখানাগুলিকে ভর্তুকি দিয়ে মাংস রফতানি বাড়ানো হচ্ছে।’’
কিন্তু পালাবদলের পর সেই একই অভিযোগে বিদ্ধ নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আজ কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে বলেছেন, ‘‘মাংস রফতানি বন্ধ করার কোনও ভাবনা মোদী সরকারের নেই।’’ রফতানির ক্ষেত্রে কসাইখানাগুলিকে কেন্দ্রের তরফে আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্মলা।
বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য বলছে, মোদী জমানায় পাল্লা দিয়েই বাড়ছে মাংস রফতানি। মনমোহন সরকারের শেষ বছরে (২০১৩-’১৪) ভারত থেকে ১৩.৮৯ লক্ষ টন মাংস রফতানি হয়েছিল। মোদী সরকারের প্রথম বছরে (২০১৪-’১৫) তা বেড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টনে পৌঁছয়। বিদেশি মুদ্রার আয়ও ৪৪৬ কোটি ডলার থেকে প্রায় ৪৯২ কোটি ডলারে পৌঁছয়। এই অর্থবছরের প্রথম সাত মাস, এপ্রিল থেকে অক্টোবরেই ৭.৩০ লক্ষ টন মাংস রফতানি হয়েছে। আয় হয়েছে প্রায় ২৩৪ কোটি ডলার। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বিজেপি নেতৃত্বের দ্বিচারিতার এটাই প্রমাণ। বিরোধী থাকার সময় ওঁরা মাংস রফতানির বিরুদ্ধে ছিলেন। এখন ওঁদের আমলেই মাংস রফতানি বাড়ছে।’’ বাণিজ্য মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, মাংস রফতানি বন্ধ করে দিলে বিদেশি মুদ্রার আয় কমবে। কসাইখানাগুলি বন্ধ হয়ে গেলে বহু মানুষ রোজগার হারাবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি অনুযায়ী গরু, বাছুর বা ষাঁড়ের মাংস রফতানি নিষিদ্ধ। কিন্তু মহিষের মাংসে নিষেধাজ্ঞা নেই। বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, যে মাংস রফতানি হচ্ছে, তার ৯৫ শতাংশেরও বেশি মহিষের মাংস। এ দেশ থেকে সব থেকে বেশি মাংস রফতানি হয়েছে ভিয়েতনাম, মিশর, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ভারতের মাংসের চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বাজারেও।