কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ছবি: পিটিআই।
কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে পিনারাই বিজয়ন সরকারের সংঘাত আরও তীব্র হল। বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিনে লিখিত ভাষণের শুধু শেষ অনুচ্ছেদটি পড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন রাজ্যপাল। তার পরেই এ বার প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজভবনের অনুষ্ঠান বয়কট করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই রাষ্ট্রপতি ভবন কিংবা দেশের রাজভবনগুলিতে ‘অ্যাট হোম’ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সরকারের সদস্যরা ছাড়াও বিশিষ্টেরা সেখানে আমন্ত্রিত হন। এ বছর তিরুঅনন্তপুরমে রাজভবনের এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কিংবা রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য যাননি। এমনকি, মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজি-ও উপস্থিত ছিলেন না। সরকারের তরফে অনুষ্ঠানে যোগ দেন কে আর জ্যোতিলাল নামে একজন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি।
রাজভবনের অনুষ্ঠানের আগে অবশ্য গত কাল সকালে কেরলে সরকারি ভাবে পালিত হওয়া প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল একসঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিরুঅনন্তপুমের সেন্ট্রাল পার্কের সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাইরের প্রভাবমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া, ক্ষমতার স্বার্থে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ও সংঘাতকে দূরে রাখারও পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর বক্তৃতায় উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা।
তবে এ বার কেরলের বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিনেই রাজ্যপাল যে কাজ করেছেন, তাতে প্রবল ক্ষুব্ধ রাজ্যের শাসক শিবির। বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্যপালেরা আইনসভায় এসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিসভার বক্তব্যকে পাঠ করে থাকেন। কিন্তু এ বার কেরল বিধানসভায় তাঁর ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, ‘‘কেরলের আইনসভায় বক্তব্য রাখতে পেরে নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। তবে এখন আমি বক্তৃতার শেষ অনুচ্ছেদটিই শুধুমাত্র পড়ছি।’’ রাজ্যপালের ভাষণের মধ্য দিয়ে যে কোনও রাজ্য সরকার তার কাজ ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে— তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। কিন্তু অ-বিজেপি সরকারের মন্ত্রিসভার তৈরি করা বক্তব্যের শুধু শেষ অনুচ্ছেদ পড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি রাজ্যপাল।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে কেরলের রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ও অন্য মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির পিছনে সেই ঘটনাই কাজ করেছে।