ফাইল চিত্র।
পাইলটদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল গত বছর কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা।
এই বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে শনিবার রিপোর্ট দিয়েছে এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন বুরো (এএআইবি)। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খাওয়ার কারণে কারণে পাইলট সম্ভবত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অবতরণের সময় ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর’ মানেননি পাইলট। সেই কারণে এই দুর্ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। তবে অসুস্থতার কারণেই বিমানের পাইলট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর মানতে পারেননি বলে মনে করা হচ্ছে।
গত বছরের ৭ অগস্ট ‘বন্দে ভারত’ মিশনের আওতায় দুবাই থেকে কোঝিকোড়ে ফিরছিল বিমানটি। ওই বিমানে ১৮৪ জন যাত্রী এবং ছয় কর্মী ছিলেন। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে পিছলে খাদে পড়ে যায় বিমানটি। মৃত্যু হয় দুই পাইলট দীপক ভি শাঠে এবং অখিলেশ কুমার-সহ ২১ জনের। এই দুর্ঘটনা নিয়ে ২৫০ পাতার বেশি একটি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে অসামরিক বিমান মন্ত্রকের অধীন এএআইবি। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘ওই বিমানের পাইলট ইন চার্জ (পিআইসি) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ডায়াবিটিসের ওষুধ নিতেন। অবতরণের সময় সেই ওষুধের প্রভাবে তাঁর হাইপোগ্লাইসেমিয়া (সুগার কমে যাওয়া) হয়ে থাকতে পারে। সেই কারণে পাইলট হয় তো একটু ঝিমিয়ে পড়েছিলেন। তাঁর দৃষ্টিবিভ্রমও হয়ে থাকতে পারে।’’
সরকারের ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পাইলটের ভুলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অবতরণের সময় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর মানেননি পাইলট। রানওয়েতে অবতরণের আগে অর্ধেক রাস্তা পেরিয়ে যাওয়ার পরে তিনি ‘গো অ্যারাউন্ড’ নির্দেশ উপেক্ষা করে এগিয়ে যান।
বিমানের অবতরণে সমস্যা দেখা দিলে এই ‘গো অ্যারাউন্ড’ নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ পেলে পাইলট বিমান না নামিয়ে ফের আকাশে নিয়ে যান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পাইলট তা করেননি। সেই কারণেই বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তবে রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পিছনে প্রযুক্তিগত সমস্যার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।