ছট পুজো। ফাইল চিত্র।
ছটের আগে থেকেই নদী, পুকুর বা কোনও জলাশয়কে আলোর রোশনাইয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। দলে দলে শোভাযাত্রা করে মানুষ পুজো দেন সেই সব জলাশয়ে। তবে এ বার আর তেমন দৃশ্য দেখা যাবে না ঝাড়খণ্ডে।
কারণ সরকার জানিয়ে দিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুকুর, নদী বা জলাশয়ে এই পুজো ঘিরে কোনও জমায়েত করা যাবে না। কারণ এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে রাজ্য প্রশাসন।
কোনও জলাশয়ে যেমন পুজো করা যাবে না, তেমনই দলে দলে শোভাযাত্রাও বার করা যাবে না। সাজিয়ে তোলা যাবে না কোনও জলাশয়ের ঘাট। করা যাবে না কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। ২০-২১ নভেম্বর ছটপুজো। তার আগে রাজ্য সরকারের এমন নির্দেশের ফলে এ বার জাঁকজমকহীন ভাবেই ছট পালন করতে হবে ঝাড়খণ্ডবাসীদের।
সরকারের অন্য নির্দেশিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে, যে সব জলাশয়ে পুজোর আয়োজন করা হয় তার আশপাশে কোনও দোকান বা মেলা বসানো যাবে না। যে হেতু করোনা রোগীদের জন্য বাজির ধোঁয়া ক্ষতিকারক, তাই ফাটানো যাবে না কোনও শব্দবাজি বা আতসবাজি। তবে রীতি মেনে ঝাড়খণ্ডবাসীরা ‘অর্ঘ্য’ নিবেদন করতে পারবেন বলে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
সংক্রমণের আশঙ্কায় এখনও কোনও সুইমিং পুল খোলার অনুমতি দেয়নি ঝাড়খণ্ড সরকার। ছটে বহু মানুষ এক সঙ্গে নদী, পুকুর, হ্রদ বা কোনও জলাশয়ে পুণ্যস্নান করে পুজো করেন। করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গেলে যা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন এক সরকারি আধিকারিক। তাই গোটা পরিস্থিতির কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: তুষারপাত উত্তর ভারতে, কোভিড কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় পর্যটন শিল্প
শুধু ঝাড়খণ্ডই নয়, দিল্লিতেও ছট নিয়ে অ্যাডভাইজরি জারি করেছে দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি(ডিডিএমএ)। কোনও নদী, পুকুর বা জলাশয়ে পুজো পালন না করে বাড়িতেই এই আচার অনুষ্ঠান পালনের পরামর্শ দিয়েছে তারা।
অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরেও ছট পুজো করা নিয়ে একটা টানাপড়েন চলছে। জাতীয় পরিবেশ আদালত গত বছর রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু তা অমান্য করেই পুজো হয় সেখানে। সরব হয়েছিলেন পরিবেশকর্মীরা। কিন্তু রাজ্য জানিয়ে দেয়, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যাবে না। চলতি বছরে রবীন্দ্র সরোবরে যাতে ছটপুজো করা যায়, সে কারণে জাতীয় পরিবেশ আদালতে ফের আবেদন করেছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়ে দেয়, সরোবরে ছটপুজো করা যাবে না। তার পরেই সরোবরে ছটপুজোর অনুমতি পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।