coronavirus

নয়া স্ট্রেনে বাড়ছে রোগী? এখনই মানছে না কেন্দ্র

গত নভেম্বরের পর থেকে দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৭
Share:

প্রতীকী চিত্র

ক্রমশ বদলে যাচ্ছে করোনাভাইরাসের চরিত্রিক বৈশিষ্ট্য। ভাইরাসের জিনের সিকোয়েন্স করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে নতুন স্ট্রেন। তবে সেই স্ট্রেনই দেশে (বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, কেরল বা পঞ্জাবে) নতুন করে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী, এখনই এমনটা মনে করছে না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে, হঠাৎ করে দেশে করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ কী, তা খুঁজে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। তবে কোভিড রোগীর সংখ্যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন করে বাড়তে শুরু করায় আজ স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে দ্রুত পদক্ষেপের উপরে জোর দেন তিনি।

Advertisement

গত নভেম্বরের পর থেকে দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছিল। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল মহারাষ্ট্র ও কেরল। ওই দুই রাজ্যেই সংক্রমণ জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেকটা বেশি ছিল। কিন্তু কেন্দ্রকে উদ্বেগে রেখে ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়া থেকেই ওই দুই রাজ্য ছাড়াও নতুন করে সংক্রমণ ছড়াতে থাকে পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ় ও জম্মু-কাশ্মীরে। দেশের একাধিক প্রান্তে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নড়েচড়ে বসেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এরই মধ্যে বিদেশ থেকে আসা কোভিড রোগীদের শরীরে ব্রিটেন স্ট্রেন (১৮৭ জন), ব্রাজিল স্ট্রেন (১ জন) ও দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেন (৬ জন) ধরা পড়ে। এই স্ট্রেনগুলির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অনেক বেশি।

বিদেশি স্ট্রেনের পাশাপাশি আরও দু’টি স্ট্রেন ‘এন৪৪০কে’ এবং ‘ই৪৮৪কিউ’ চিন্তায় রেখেছে চিকিৎসক ও গবেষকদের। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিজি বলরাম ভার্গব বলেন, “মহারাষ্ট্র ও দেশের অন্য প্রান্তে করোনা বৃদ্ধির সঙ্গে ওই দুই স্ট্রেনের সরাসরি কোনও সম্পর্ক এখনও পাওয়া যায়নি।” করোনাভাইরাসের ওই স্ট্রেনগুলি ভারতে নতুন নয় বলেও দাবি করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ভার্গব জানান, ওই দু’টি স্ট্রেন শুধু ভারতে নয়, অন্য দেশেও পাওয়া গিয়েছে। আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল বলেন, “ভাইরাসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য নিয়মিত ভাবে ভাইরাসের জিনের সিকোয়েন্স করে দেখা হচ্ছে। এর দায়িত্বে রয়েছে ‘ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ জিনোমিক্স কনসর্টিয়াম’ (আইএনএসএসিওজি)। ভাইরাসের চরিত্রে কোনও অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে কি না, সেটি বিশ্লেষণ করে দেখাই এদের প্রধান কাজ। তারা ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫০০ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করেছে।’’

Advertisement

এই বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই আজ স্বাস্থ্যকর্তারা দাবি করেছেন, দু’টি স্ট্রেনের মধ্যে ‘ই৪৮৪কিউ’ স্ট্রেনটি গত মার্চ ও জুলাই মাসে প্রথম মহারাষ্ট্রে পাওয়া যায়। আর ‘এন৪৪০কে’ স্ট্রেনটি গত মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসমের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। ফলে ওই দুই স্ট্রেন এত দিন পরে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, এই তত্ত্ব মানতে রাজি নন গবেষকেরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, “ঠিক কী কারণে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় দল ওই রাজ্যগুলিতে পৌঁছে গিয়েছে। সংক্রমণ বাড়ছে স্ট্রেনের কারণে, নাকি কোনও সুপার স্প্রেডার সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী, অথবা জনতাই কি মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ছেড়ে দিয়েছে— সে সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ খুঁজে পাওয়ার পরে ওই টিম সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের রাস্তাও জানিয়ে দেবে।” সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের টিকাকরণ দ্রুত সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়ে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় প্রশাসনকে আজ চিঠি পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব মনোহর অগনানী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement