ছবি: সংগৃহীত।
টাকা লাগত না এত দিন। কিন্তু অসুস্থ যাত্রীকে বিমানে আর বিনামূল্যে অক্সিজেন দেবে না সরকারি উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। বিনিময়ে টাকা নেবে। সংস্থা সূত্রের খবর, প্রতি বোতল অক্সিজেনের জন্য এ বার ১১ মার্কিন ডলার এবং অক্সিজেন দেওয়ার বিশেষ মাস্কের জন্য ১১০ মার্কিন ডলার বা সেই অনুপাতে ভারতীয় টাকা দিতে হবে। এই মাস্ক এক বার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হয়।
কোনও অসুস্থ যাত্রীকে বিমানে করে এক শহর থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে হলে টিকিট কাটার আগেই একটি মেডিক্যাল ফর্ম পূরণ করতে হয়। তার সঙ্গে জমা দিতে হয় যাত্রীর শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত পূর্ণ রিপোর্ট। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে উড়ান সংস্থার চিকিৎসকেরা যাচাই করেন, সংশ্লিষ্ট যাত্রী উড়ানে যেতে সমর্থ কি না। যদি সমর্থ হন, তখন তাঁকে ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। উড়ানে সেই যাত্রীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে এত দিন এয়ার ইন্ডিয়াই তা দিত।
এখন টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন?
এয়ার ইন্ডিয়ার একাংশ জানিয়েছে, প্রধানত উত্তর-পূর্ব থেকে তাদের উড়ানে অসুস্থ যাত্রীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাঁদের বিনামূল্যে অক্সিজেন দিতে গিয়ে উড়ান সংস্থার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে বিস্তর। অভিযোগ, জরুরি প্রয়োজন না-থাকা সত্ত্বেও বাড়তি টাকা লাগছিল না বলেই অনেক রোগী ঝুঁকি এড়াতে অক্সিজেন চেয়ে রাখেন। নিজেদের চিকিৎসকদের দিয়ে অক্সিজেনের প্রয়োজনের কথা লিখিয়ে মেডিক্যাল ফর্মে তা উল্লেখ করে রাখছিলেন। এতে এয়ার ইন্ডিয়ার খরচ উত্তরোত্তর বেড়েই চলছিল।
এমনিতে প্রতিটি উড়ান সংস্থার বিমানে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা বাধ্যতামূলক। মাঝ আকাশে কোনও যাত্রী আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়। বিমানসেবিকারা জানান, এক বার ব্যবহৃত হলে মাটিতে নেমে সেই সিলিন্ডার আবার ভরে নেওয়াটাও বাধ্যতামূলক। সাধারণত এয়ারবাস ৩২০-র মতো বিমানে এমন পাঁচটি সিলিন্ডার রাখা হয়। তার জন্য অবশ্য কোনও টাকা নেওয়ার রীতি নেই।
কিন্তু আগে থেকে জানিয়ে রাখলে অসুস্থ যাত্রীর প্রয়োজনে এয়ার ইন্ডিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। স্পাইসজেট, ইন্ডিগোর মতো বেসরকারি উড়ান সংস্থা জানিয়েছে, তারা এই অক্সিজেন সরবরাহ করে না। কোনও যাত্রীর প্রয়োজন হলে তাঁকে ‘পোর্টেবল অক্সিজেন কনসেনট্রেটর’ সঙ্গে নিতে বলা হয়। বিমানে সঙ্গে রাখার জন্য এই ধরনের ছোট বোতল বাজারে পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের চিকিৎসক
সুজিত বক্সী জানান, বোতলের দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। তা কাজে লাগে আধ থেকে এক ঘণ্টা। তাই দু’ঘণ্টার উড়ান থাকলে দু’-তিনটি বোতল রোগীর সঙ্গে থাকা উচিত। এয়ার ইন্ডিয়া কিন্তু অসুস্থ যাত্রীকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নিয়ে বিমানে উঠতে দেয় না।