বিমান থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু।
আহত যাত্রীদের আর্তনাদ, উদ্ধারকর্মীদের কোলে ভয়ার্ত শিশুর দল, অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন। দুবাই থেকে কোঝিকোড়ে আসা বিমান রানওয়ে থেকে পিছলে খাতে পড়ার পরে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল কেরল।
বিমানটি ভেঙে পড়ার প্রবল শব্দেই স্থানীয় বাসিন্দারা বুঝতে পারেন, বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন তাঁরা। এক জনের কথায়, ‘‘দেখলাম শিশুরা বিমানের আসনের নীচে আটকে রয়েছে। যত ক্ষণে আমরা পৌঁছই তত ক্ষণে কয়েক জনকে বিমান থেকে নামানো হয়েছে। অনেকের হাত-পা ভেঙে গিয়েছিল। আমার হাত আর শার্ট ভিজে গেল রক্তে।’’ উদ্ধারকার্যে শামিল আর এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, আহত পাইলটদের ককপিট ভেঙে বার করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য মৃত্যু হয়েছে দুই পাইলটেরই।
ঘটনার আকস্মিকতায় কার্যত স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন যাত্রীরা। অ্যাম্বুল্যান্স আসার আগেই স্থানীয় বাসিন্দারা অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আরও পড়ুন: কোঝিকোড়ে নামার সময় পিছলে গিয়ে দু’টুকরো বিমান, হত অন্তত ১৭, আহত বহু
কোন্ডট্টির যে দুটি হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়েছে সেখানেও দৃশ্য প্রায় একই। হঠাৎ এমন বিপর্যয় সামলাতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খান ডাক্তার-নার্সেরা।
রাতেই কোঝিকোড়ের বেবি মেমোরিয়াল হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনেরা। সকলেই হাসপাতালে ঢুকে খবর নিতে চাইলেও করোনা নিষেধাজ্ঞার কারণে সতর্কতা নিতে বাধ্য হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেকে মাস্ক পরে রয়েছেন কি না তা দেখে এবং হাসপাতালে ভিড় না হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে আত্মীয়দের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন নৌফাল। তাঁর বোন নাফিলা ও তাঁর পাঁচ বছর বয়সি মেয়ে ছিলেন ওই বিমানে। বললেন, ‘‘নাফিলাকে প্রথমে এখানে আনা হলেও ওর মেয়েকে মালাপুরমের একটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে ওকেও এখানে আনা হয়েছে। ওরা আপাতত ঠিক আছে।’’
আরও পড়ুন: এক দিনে ৫২ জন মারা গেলেও রাজ্যে কমল সংক্রমণের হার
আহতদের কোঝিকোড়ের সাতটি ও মালাপুরমের কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কোঝিকোড়ের প্রত্যেকটি হাসপাতালের দায়িত্ব এক এক জন আমলাকে দিয়েছেন জেলাশাসক। বেবি মেমোরিয়ালের দায়িত্বে রয়েছেন ডেপুটি তহসিলদার বিজয়ন পিএস। কাজ করতে করতে বললেন, ‘‘এখন আহতদের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। করোনা বিধি তো আর এই পরিস্থিতিতে পুরোপুরি মানা সম্ভব নয়।’’