ফারুক এবং ওমর আবদুল্লা। ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’মাস আটক থাকার পর অবশেষে দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সভাপতি ফারুক আবদুল্লা ও তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লা। রবিবারই ফারুক ও ওমরের সঙ্গে দেখা করে ওই প্রতিনিধি দলটি। ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র মদন মান্টুর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আঞ্চলিক সভাপতি দেবেন্দ্র সিংহ রানার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ দিন সকালে শ্রীনগরে ফারুক এবং ওমরের সঙ্গে দেখা করেন।
মান্টু জানিয়েছেন, দেবেন্দ্র রানার অনুরোধেই ফারুক এবং ওমরের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। প্রতিনিধি দলে ছিল এনসি-র ১৫ জন সদস্য। ফারুক এবং ওমরের সঙ্গে দেখা করার পর এনসি নেতা আকবর লোন এবং হাসনাইন মাসুদি বলেন, “ফারুক এবং ওমর আবদুল্লা কেমন আছেন তা দেখতে এসেছিলাম। রাজনীতির বিষয়ে কোনও কিছুই আলোচনা হয়নি।” পাশাপাশি তাঁরা আরও জানান, যে হেতু তাঁদের বেশির ভাগ নেতাই ‘জেলে বন্দি’, তাই এ বার ব্লক উন্নয়ন পরিষদে অংশ নেবে না ন্যাশনাল কনফারেন্স।
ফারুক এবং ওমরের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতারা। কেন তাঁদের নেতাকে আটক করে রাখা হয়েছে এ নিয়ে ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা। এনসি-র মুখপাত্র জানান, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকের পর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত শুক্রবার শ্রীনগরের শের-এ-কাশ্মীর ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন এনসি-র নেতারা। ওই দিন দলের মুখপাত্র এটাও জানান যে, রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর একটা পর্যালোচনাও করা হয়েছে বৈঠকে।
গত ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের ঠিক আগের দিন রাতেই ফারুক এবং ওমরকে আটক করে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। ফারুককে শ্রীনগরেই তাঁর বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। রাজ্য প্রশাসনের গেস্ট হাউস হরি নিবাসে আটক করে রাখা হয় ওমরকে। অন্য দিকে, পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতি এবং জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স-এর চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন-সহ কাশ্মীরের আরও বহু রাজনীতিকের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয় রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: সাত চুক্তি সই করল ঢাকা-দিল্লি
আরও পড়ুন: গাছ কাটা নিয়ে ক্ষোভ, মুম্বইয়ে ধৃত ২৯
সম্প্রতি জম্মুর রাজনীতিকদের মুক্তি দিয়েছে সরকার। কাশ্মীরের রাজনীতিকদেরও একে একে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সময় মতো ওমর, ফারুক এবং মেহবুবা মুফতিদের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে রাজ্যে ‘রক্তবন্যা’ এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন।
শুক্রবারই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপালের উপদেষ্টা এক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “এই সব নেতাকে আটক করার কারণেই রাজ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তাঁদের আটকের ফলাফল স্পষ্ট।” এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “আগে কাশ্মীরে এ রকম কোনও পদক্ষেপ করা হলে রক্তবন্যা বয়ে যেত। কিন্তু এ বারে তেমনটা ঘটেনি। কারণ সময় মতো এই সব নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”