—প্রতীকী ছবি।
দেশ জুড়ে বিতর্কের মধ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আগামিকাল আলোচনায় বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তবে নরেন্দ্র মোদী সরকার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট না করা পর্যন্ত ধীরে চলো নীতি নিয়ে এগোনোরই পক্ষপাতী কংগ্রেস নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আসতে চলেছে, দলীয় মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কার্যত তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির একাংশের মতে, চলতি বাদল অধিবেশনেই ওই বিল আনতে পারে সরকার। তার আগে আগামিকাল ২১তম আইন কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে বৈঠকে বসতে চলেছে আইন ও বিচার মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সূত্রের খবর, কালকের আলোচনার বিষয়বস্তু হল মূলত ২১তম আইন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় বা কাম্য কি না তা খতিয়ে দেখা। ২২তম আইন কমিশন এখনও এ বিষয়ে মতামত দেয়নি। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সব পক্ষের মত নেবে কমিশন। তার পরে সরকারের কাছে চূড়ান্ত মতামত জানাবে তারা। আপাতত তাই এ বিষয়ে মেপে পা ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস।
আম আদমি পার্টি, শিবসেনার মতো দল অবশ্য ইতিমধ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করার আশ্বাস দিয়েছে। আজ মায়াবতীর দল বিএসপিও বলেছে, তারা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে। এ দিকে তৃণমূল, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলি বিরোধিতা জানিয়েছে। কিন্তু সামনেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সূত্রের মতে, তার আগে এই নিয়ে বিরোধিতা করে বিজেপিকে বাড়তি ফায়দা দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। কারণ দল মনে করছে, বিষয়টি নিয়ে যত বিরোধিতা হবে, তত মেরুকরণের রাজনীতি বাড়বে। যা থেকে ভোটের বাক্সে ফায়দা তুলবে বিজেপি। সেই কারণেই নীরব থাকার কৌশল নিয়ে এগোতে চাওয়া। তবে কংগ্রেসকে উদ্দেশ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের কটাক্ষ, ‘‘যে ভাবে অন্য দলগুলি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সমর্থনে এগিয়ে আসছে তাতে আসলে কংগ্রেস ক্ষুব্ধ।’’
এ দিকে হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের ছেলে তথা বর্তমানে ওই রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংহ কিন্তু প্রকাশ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি রূপায়ণের পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময়েই বলে থাকি, আইন সকলের জন্য সমান হওয়া উচিত। আমি আশা করব রাজনীতি নয়, দেশের স্বার্থে ওই আইন আনা হবে।’’ ভোটের মুখে বিল আনতে চাওয়াকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভোট এলেই বিজেপির অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা মনে পড়ে।’’