প্রতীকী ছবি।
বিজেপির উস্কানিমূলক মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয় না ফেসবুক— এমন অভিযোগে সংসদীয় কমিটির সামনে হাজির হতে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। ফের কমিটির মুখোমুখি হতে হচ্ছে মার্ক জাকারবার্গের সংস্থাকে। এ বার অবশ্য যোগ হচ্ছে টুইটারও। আগামী ২১ জানুয়ারি তলব করা হয়েছে দুই সংস্থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগরিকদের স্বার্থরক্ষা তথা তথ্য সুরক্ষা, নারী সুরক্ষা-সহ একাধিক বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে দুই সংস্থাকে।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক বিজেপি নেতাদের ঘৃণা-উস্কানিমূলক মন্তব্য গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ— বার বার তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটস্অ্যাপও এখন এই সংস্থার অধীনে। সম্প্রতি হোয়াটস্অ্যাপ আবার সুরক্ষাবিধিতে বদল এনেছে। অন্য দিকে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের বিরুদ্ধেও রয়েছে বহু অভিযোগ। ভুল, মিথ্যা, ভুয়ো খবর বা গুজব ছড়ানো রুখতে না পারা, ইউজারদের তথ্য চুরির মতো নানা অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে।
সেই সব নিয়েই এ বার সংসদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটি তলব করল দুই সংস্থার কর্ণধারদের। ইউজার তথা ভারতীয় নাগরিকদের তথ্য সুরক্ষায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইবেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। বছরখানেক আগে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে গুজবের জেরে প্রায় প্রতিনিয়ত গণপিটুনির ঘটনা ঘটছিল। এই সব গুজব, ফেক নিউজ ছড়ানো আটকাতে দুই সংস্থা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তাও ব্যাখ্যা করতে হবে কমিটির সামনে।
আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেবে শিবসেনা, তৃণমূলের পাশে দাঁড়াতেই সিদ্ধান্ত উদ্ধবের!
সম্প্রতি নয়া সুরক্ষাবিধি চালু করেছিলেন হোয়াটস্অ্যাপ কর্তৃপক্ষ। তাতে ওই নয়া নিয়ম মেনে না নিলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছিল। মেসেজ বক্সে পাঠানো হচ্ছিল মেসেজ। তাতে সম্মতি না দিলে হোয়াটস্অ্যাপ চালুই করা যাচ্ছিল না। ফলে অনেকে ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়ে দিয়েছেন অথবা হোয়াটস্অ্যাপ ছেড়ে অন্য মেসেজিং অ্যাপ-এর দিকে ঝুঁকেছেন। নয়া ওই সুরক্ষাবিধিতে তথ্য সুরক্ষিত থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার জেরে সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে মার্ক জাকারবার্গের অধীন সংস্থা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী ৮ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নয়া সুরক্ষাবিধি তুলে নেওয়া হবে। অর্থাৎ ওই বিধি আর কার্যকর থাকবে না।
আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে গেরুয়া রথ বঙ্গে, পাঁচ যাত্রার শেষে মেগা সমাবেশ
আবার টুইটারেও দেখা গিয়েছে, বহু ভুয়ো খবর দাবানলের মতো ছড়িয়েছে। উস্কানিমূলক মন্তব্যকেও ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমেরিকার ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্য করে গিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বহু পোস্ট মুছে দেওয়া হয়েছে বটে, কিন্তু তাতে অনেক দেরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। ফলে কার্যত কার্যসিদ্ধি হয়ে গিয়েছে ট্রাম্পের। তাই এ বার শুধু ফেসবুক নয়, এই মাইক্রোব্লগিং সাইটকেও ডেকে পাঠিয়েছে সংসদীয় কমিটি।