সংসদ অধিবেশনে হট্টগোল। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির হিংসা নিয়ে আজ তৃতীয় দিনও ভেস্তে গেল সংসদ অধিবেশন। গত কালই স্পিকার জানিয়েছিলেন, দোলের পর বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় রাজি সরকার। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবি ছিল, আলোচনা করতে হবে অবিলম্বে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকতে হবে অধিবেশনে। দিল্লির হিংসা নিয়ে তাঁকে জবাব দিতে হবে। সেই দাবি সরকার মেনে না নেওয়ায়, আজও বিক্ষোভ দেখানো হল দুই কক্ষে। যার জেরে রাজ্যসভায় গোড়াতেই গোটা দিনের জন্য এবং লোকসভায় দফায় দফায় মুলতুবির পর কাল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হল অধিবেশন। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, দোলের আগে অধিবেশন চলার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ চাইছেন দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে হত্যা করতে। রাজ্যসভা এবং লোকসভা— সংসদের দু’টি কক্ষেই নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনও ভাবেই দিল্লি হিংসা নিয়ে আলোচনা করতে দেওয়া না হয়। কংগ্রেস, তৃণমূল এবং এসপি— রাজ্যসভার তিন বিরোধী দল নোটিস জমা দেয় অধিবেশনের অন্যান্য কর্মসূচি বাতিল করার জন্য। সেই নোটিস পড়াও হয়নি। এখন বলা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’’
তবে একই সঙ্গে তৃণমূলের সংসদীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে সংসদীয় কানুন ভেঙে কার্যত বিজেপি তথা শাসক দলের সুবিধাই করে দিচ্ছে কংগ্রেস। তৃণমূলের এক শীর্ষ পর্যায়ের নেতার মতে, ‘‘বেশির ভাগ বিরোধী দলই এককাট্টা হয়ে চাইছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আলোচনার সময় উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী যেভাবে তাঁর দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাতে অমিত শাহের লোকসভায় আসাটা আরও অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে।’’
অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, আপ-এর মতোই তৃণমূলও দিল্লি হিংসা নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা ওয়েলে আসছে না। কেজরীবালের দলের মতোই গা বাঁচিয়ে চলছে। উত্তরে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘নিজের আসনে দাঁড়িয়ে বিষয়ভিত্তিক তীব্র প্রতিবাদ জানানোটাই আমাদের লক্ষ্য। তার জন্য ওয়েল টপকে সরকারের বেঞ্চে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর প্রয়োজন হয় না।’’
গতকাল লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী, ডিএমকে নেতা টি আর বালু এবং এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলেকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জট কাটাতে। সেখানে স্পিকার নির্দেশ দেন, কোনও পক্ষের সাংসদই তাঁর নিজের জায়গা ছেড়ে বিপক্ষ শিবিরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে পারবেন না। অধীরবাবু এ ব্যাপারে সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে গতকাল দুপুরেই নিজে ওয়েল পার করে ট্রেজারি বেঞ্চে ছুটে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ।