সংসদে ঢুকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে হাত মিলিয়ে চলার ডাকে সাড়া দিতে রাজি নন, শুক্রবার সংসদের শীত অধিবেশনের প্রথম দিনেই তা বুঝিয়ে দিলেন বিরোধীরা।
পাকিস্তানের আমলাদের সঙ্গে দিল্লিতে পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সহ কংগ্রেস নেতাদের নৈশভোজ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন বিরোধীরা। তাঁকে ক্ষমা চাইতেও বলা হল। না চাইলে, সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন বার বার রুখে দেওয়ার হুমকি দিল প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। আর লোকসভায় শীত অধিবেশনের শুরুতে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী বললেন, ‘‘আমি সব দলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আর আশাও করছি, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা সরকারের হাতে হাত মিলিয়ে সংসদে আলোচনায় অংশ নেবেন। বিতর্কে সামিল হবেন। এবং জোট বেঁধে কাজ করবেন।’’ কিন্তু বিরোধীদের দাবি না মেনে নেওয়া হলে তা যে হওয়ার নয়, দেরিতে শুরু হওয়া সংক্ষিপ্ত শীত অধিবেশনের প্রথম দিনেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
আরও পড়ুন- রোগীদের লিভারে সই করে কাঠগড়ায় নামী সার্জেন
আরও পড়ুন- অবসর নেওয়াই কাজ এখন, জানালেন সনিয়া
এ দিন প্রয়াত সাংসদদের স্মরণ অনুষ্ঠানের পরেই মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন। আর রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই পাকিস্তানের সঙ্গে মনমোহনকে জড়িয়ে মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্যাখ্যা আর ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাতে শুরু করেন বিরোধীরা। সেই দাবিতে বার বার মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার এ দিনের অধিবেশন। কিন্তু তার পরেও বিরোধীদের সেই দাবি খারিজ করে দেন উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু।
বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে দিল্লিতে পাক আমলাদের সঙ্গে মনমোহন সিংহ নৈশভোজ করেছেন বলে যে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, তা তিনি প্রমাণ করুন। কেন এমন কথা বললেন, তা ব্যাখ্যা করুন। তাঁর কথা যদি সঠিক না হয়, যদি গুজরাত ভোটের কথা মাথায় রেখেই তিনি ওই মন্তব্য করে থাকেন, তা হলে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে শুধু সংসদেই নয়, আপামর দেশবাসীর কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে।’’
সিপিআই নেতা ডি রাজা বলেন, ‘‘এটা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ফোন করলেন না কেন মনমোহনজীকে? তা না করে কেন মন্তব্যটা করলেন গুজরাতে নির্বাচনী প্রচার সভায়?’’
এই শীত অধিবেশনেই ১৪টি নতুন ও ২৫টি পুরনো বিল আসার কথা সংসদে। শীত অধিবেশন সাধারণত শুরু হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে। আর তা চলে এক মাস। কিন্তু গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশ বিধানসভার ভোটের জন্য এ বার সেই অধিবেশন কিছুটা দেরিতে শুরু হল। এ বার অধিবেশন চলবেও মাত্র ২০ দিন ধরে।