বাঁ দিক থেকে মহুয়া মৈত্র, অপরাজিতা ষড়ঙ্গী। ছবি: পিটিআই, এক্স।
সংসদের এথিক্স কমিটির বৈঠকে ‘শিষ্টাচার’-এর মাত্রা ছাড়িয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। অভিযোগ করলেন বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা ষড়ঙ্গী। ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে বৃহস্পতিবার মহুয়াকে ডেকে পাঠিয়েছিল সংসদের এথিক্স কমিটি। কমিটির যে সদস্যেরা মহুয়ার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সেই প্যানেলে ছিলেন অপরাজিতাও।
বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা। মহুয়া জানান, তাঁকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নের মাধ্যমে মৌখিক ভাবে তাঁর ‘বস্ত্রহরণ’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিও দেন মহুয়া। তাঁর সেই অভিযোগ শুক্রবার উড়িয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা। তিনি বলেন, ‘‘মহুয়া সব ধরনের শিষ্টাচারের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। আমরা মহুয়াকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল। দর্শন হীরানন্দানি যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাঁর উপর ভিত্তি করেই শুধু প্রশ্ন করেছিলেন কমিটির চেয়ারম্যান। তাই সীমা ছাড়ানোর বা হলফনামার বাইরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’
অপরাজিতা আরও অভিযোগ করেছেন, মহুয়া ব্যক্তিগত বিষয়েই বেশি কথা বলে যাচ্ছিলেন। অপরাজিতা বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান যখন হলফনামার উপর ভিত্তি করে কিছু প্রশ্ন করেন, তখন মাথা গরম করে ফেলেন মহুয়া। চেয়ারম্যান এবং প্যানেলের সদস্যদের বিরুদ্ধে নোংরা কথা বলেন।’’ এখানেই থামেননি অপরাজিতা। তাঁর কথায়, ‘‘হাবেভাবে খুবই উদ্ধত ছিলেন তিনি। খুবই রুক্ষ ছিলেন। তিনি ভুয়ো বক্তব্য তৈরি করে দেশের মানুষকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন। নিজেকে হেনস্থার শিকার হিসাবে তুলে ধরেছেন।’’
বৃহস্পতিবা এথিক্স কমিটির বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা। বিরোধী সাংসদদের তরফে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে। মহুয়ার অভিযোগ, বৈঠকে তিনি গালে হাত রেখেছিলেন। তা নিয়েও ‘বাজে’ কথা বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা সব কিছুই ধরছিলেন। বাজে কথা বলছিলেন। ওঁরা বলেন, ‘আপনার চোখে জল’। আমার চোখে কি জল? আপনারা দেখতে পারছেন?’’ অন্য এক বিরোধী সাংসদ বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা অতিরিক্ত ছিল।’’ মহুয়াকে যে ভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তা নিয়ে সরব হয়েছেন বিএসপির সাংসদ দানিশ আলি। সূত্রের খবর, মহুয়া রাতে কোন হোটেলে ছিলেন, কার সঙ্গে কথা বলেছেন, এ ধরনের ‘ব্যক্তিগত’ বিষয়েও প্রশ্নও করেছেন কমিটির প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদকুমার সোনকার। যদিও কমিটির তরফে সোনকার জানান, মহুয়া কমিটির সঙ্গে বা তদন্তে কোনও সহযোগিতা করেননি। আরও প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই বেরিয়ে যান। তিনি এও দাবি করেছেন, মহুয়া বৈঠকে কিছু ‘আপত্তিকর শব্দ’ ব্যবহার করেছেন।