ফাইল ছবি
যেন কাটাকুটি খেলা!
এডিএমকে-র দুই নেতা ই পলানীস্বামী আর ও পনীরসেলভম এখন একের পর এক বিরোধী শিবিরের নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করে চলেছেন। আর একে সাকার্সের সঙ্গে তুলনা করে মুখ টিপে হাসছেন তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে-র নেতারা।
গত ১১ জুলাই এডিএমকে-র সাধারণ পরিষদের বৈঠকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী দলের অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েই দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন আর এক শীর্ষ নেতা পনীরসেলভমকে। পাল্টা পলানীস্বামীকেও দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন পনীরসেলভম। এবার পনীরসেলভমের ২১ জন অনুগত নেতাকে এডিএমকে থেকে তাড়ালেন পলানীস্বামী। পনীরসেলভমকে এডিএমকে-র আহ্বায়কের পদ থেকে সরানোর পর এখনও পর্যন্ত তাঁর ঘনিষ্ঠ ৩৯ জন নেতাকে বহিষ্কার করলেন পলানীস্বামী। আর সবটাই করা হয়েছে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ এনে। কাটাকুটির এই পর্বে অবশ্য নাম রয়েছে পনীরসেলভমের দুই ছেলে, ওপি রবীন্দ্রনাথ এবং ভি পি জয়প্রদীপের। এছাড়া, প্রাক্তন মন্ত্রী নটরাজন, প্রাক্তন বিধায়ক সৈয়দ খান, আর টি রামচন্দ্রণদেরও দল থেকে বার করে দিয়েছেন পলানীস্বামী।
গত ১১ জুলাই সাধারণ পরিষদের বৈঠকে শুধু পনীরসেলভমকে দলে জায়গা না দেওয়ার চেষ্টায় ১৬টি প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। এডিএমকে-র যৌথ নেতৃত্বের ফর্মূলা শেষ করতে আহ্বায়ক, সহ-আহ্বায়কের পদ তুলে দেওয়া হয়েছে। জয়ললিতার মৃত্যুর পর থেকে পলানীস্বামী ও পনীরসেলভমকে সামনে রেখে যৌথ নেতৃত্ব চলছিল এডিএমকে-তে। পলানীস্বামী ছাড়াও আহ্বায়ক পদে ছিলেন পনীরসেলভম। কিন্তু সেই সব পদ তুলে দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া চেয়ারটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর তাতে আপাতত নিজেই বসে গিয়েছেন পলানীস্বামী। বলা হয়েছে, আগামী চার মাসের মধ্যে এই পদের জন্য ভোট হবে। দলের সাধারণ সদস্যরা নতুন নেতা নির্বাচিত করবেন। স্বভাবতই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
পনীরসেলভম অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁকে বহিষ্কার করতে ডাকা সাধারণ সভার বৈঠকের কোনও ভিত্তিই নেই। আইনি পথে তিনি এর জবাব দেবেন। পনীরসেলভমের যুক্তি, তাঁকে সরানোর কোনও অধিকারই ওই বৈঠকের ছিল না। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পলানীস্বামী শিবিরের ৬৬ জন নেতাকে বহিষ্কার করে দিয়েছেন পনীরসেলভম। যার মধ্যে পলানীস্বামী ছাড়াও জয়কুমার, উদয়কুমারের মতো নেতারা রয়েছেন। এডিএনকে-র কয়েকজন পদাধিকারীও নিয়োগ করেছেন তিনি। সাধারণ সভার বৈঠক আটকাতে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দরজায় কড়া নেড়েছিলেন পনীরসেলভম। আদালত অবশ্য তাঁর সেই আর্জি খারিজ করে বৈঠকে সবুজসঙ্কেত দিয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে।
আর দুই শিবিরের এই লড়াইয়ের মধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জয়ললিতার বান্ধবী শশিকলা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থেই সাধারণ সভার ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠক পুরোপুরি বেআইনি। সব মিলিয়ে দ্রাবিড় রাজনীতিতে নাটক জমে উঠেছে বেশ ভাল রকম। আগামী কাল দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন পলানীস্বামী। সেখানে কার জন্য, ঠিক কী সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করে আছে কে জানে!