পাকিয়ং। ফাইল চিত্র।
গত বছর জুনে কম দৃশ্যমানতা এবং প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সিকিমের পাকিয়ংয়ে। এটি ভারত-চিন সীমান্ত লাগোয়া উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রথম গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর। তবে বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সামরিক প্রয়োজনে তা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, রিফুয়েলিং বা যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টারে তেল ভরার প্রয়োজনে রানওয়েতে কয়েকটি বিমানকে দাঁড় করানোর জন্য বিমানবন্দরে ব্যবস্থা রয়েছে। গত এক বছরে একাধিকবার সামরিক বিমান, হেলিকপ্টার এই বিমানবন্দর থেকে ওঠানামা করেছে। বাগডোগরা, গুয়াহাটি, শিলং-র সঙ্গে বিকল্প বিমান ঘাঁটি হিসাবে রাখা হয়েছে সিকিমের পাকিয়ং-কে।
এই বিমানবন্দরে ডর্নিয়র ২২৮ বিমান নিয়ে ওঠানামা করিয়েছে বায়ুসেনা। পরে সামরিক লজিস্টিক বা মালপত্রের জন্য ব্যবহার করা বায়ুসেনার এএন-৩২ বিমান পাকিয়ং-এ নামানো হয়েছে। নিয়মিত হেলিকপ্টারের অবতরণের কাজেও পাকিয়ং-এর রানওয়ে ব্যবহার হয়েছে। পাকিয়ং বিমানবন্দর অধিকর্তা রামতনু সাহা বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিক বিমান চালুর জন্য চিঠি দিয়ে রেখেছি। করোনার জন্য তা কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। সামরিক প্রয়োজনে তা ব্যবহার হতে পারে।’’
লাদাখের সংঘর্ষ, তার আগে গত মাসে নাকু লার সংঘর্ষের পর সিকিমের চিন সীমান্তের উপর কড়া নজরদারি রয়েছে সেনার। সেখানে সমতল থেকে সীমান্তে পৌঁছতে সড়ক পরিবহণ ছাড়াও সিকিমের দু’টি হেলিপ্যাড ব্যবহৃত হয়। রেলপথের কাজ এখনও বাকি থাকায় তৃতীয় বিকল্প হিসাবে এখন রয়েছে পাকিয়ং বিমানবন্দর। করোনা নিয়ে সিকিমে নানা বিধিনিষেধ, পর্যটক গতিবিধি আটকে রাখার জেরে বিমানবন্দরটি চালু হতে অক্টোবর হতে পারে। কিন্তু বর্তমান সামরিক পরিস্থিতিতে যে কোনও সময়ে তা ব্যবহার হতে পারে। সেনা, বায়ু সেনার তরফে ইতিমধ্যে পর্যবক্ষেণ করা হয়েছে।
সেনা সূত্রের খবর, পাকিয়ং বিমানবন্দর থেকে চিন সীমান্তের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। বিমানবন্দরের পশ্চিমে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে ভারত-চিন-ভুটানের ডোকলাম। ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে নাথু লা সীমান্ত। এর আরও উত্তরে পাহাড়ি এলাকার মধ্যে রয়েছে নাকু লা। ১৯৬৭ সালে নাথু লা, ২০১৭ সালে ডোকলাম এবং ২০২০ সালে নাকু লা সীমান্তে চিনের সেনার সঙ্গে ভারতীয় সেনার সংঘর্ষ বা মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।
সিকিমের যোগাযোগের জন্য শুধুমাত্র সড়ক পরিবহণের উপর নির্ভর করে না থেকে এক দশক আগেই কেন্দ্রীয় সরকার রেল ও বিমানপথে সিকিমকে জোড়ার পরিকল্পনা করে। দুইক্ষেত্র মিলিয়ে বরাদ্দ প্রায় ৫০০০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ৬০০ কোটির উপর পাকিয়ংয়ে খরচ হয়েছে।