Zakiur Rehman Lakhvi

অবশেষে! দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানেই, মানল ইসলামাবাদ

চাপে পড়ে এ বার আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসলামাবাদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ২২:০০
Share:

ইসলামাবাদ যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সেই তালিকায় রয়েছে দাউদ ইব্রাহিমের নামও। ছবি: সংগৃহীত।

দাউদ রয়েছে পাকিস্তানেই। বছরের পর বছর ধরে অস্বীকার করার পর অবশেষে পাক সরকার স্বীকার করল যে ভারতের 'মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান' অর্থাৎ মুম্বই হামলার মূল চক্রী দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা।

Advertisement

পাক প্রশাসন দাউদের ঠিকানাও জানিয়েছে। করাচির ক্লিফটনে সৌদি মসজিদের কাছে হোয়াইট হাউস। এটাই আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের বাড়ির ঠিকানা। কিন্তু পাক সরকারের এ হেন স্বীকারোক্তির কারণ কী?

ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টার্স্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চ পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে। তা ঘটলে বিপুল আর্থিক ধাক্কার মুখে পড়তে পারে ইসলামাবাদ। সেই আশঙ্কায় ১২ বছর পর মুম্বই হামলার মূলচক্রীদের বিরুদ্ধে মরিয়া পদক্ষেপ করল পাকিস্তান। সে দেশের ৮৮টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইমরান খান সরকার। তাই চাপে পড়ে এবার আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসলামাবাদ। ইসলামাবাদ যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে হাফিজ সইদ, মাসুদ আজহার, জাকিউর রহমান লকভির মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর পাণ্ডারা। পাকিস্তানের এই তালিকায় রয়েছে দাউদ ইব্রাহিমের নামও।

Advertisement

২০১৮ সালের জুনে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করে প্যারিসকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক মঞ্চ এফএটিএফ। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইসলামাবাদকে কালো তালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। গত বছরের মধ্যেই জঙ্গিগোষ্ঠী এবং জঙ্গি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে নির্দেশ দিয়েছিল এফএটিএফ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য সেই সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সে দিকে নজর রেখেই ইসলামাবাদ তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপ করছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

পাক প্রশাসনের তরফে গত দু’টি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তার একটিতে নাম রয়েছে জামাত উদ দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদ, জইশ ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন তথা মুম্বইয়ের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অন্যতম অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিম। অন্য একটি বিজ্ঞপ্তিতে জামাত উদ দাওয়া, জইশ ই মহম্মদ, তালিবান, আইএসআইএস, হক্কানি নেটওয়ার্ক, আল কায়দা এবং আরও বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নাম রয়েছে। লকভির বিদেশ যাত্রাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আডবাণী-জোশীদের নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও এক মাস সময় সিবিআই আদালতকে

বিজ্ঞপ্তি জারি করার মাধ্যমে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের যে পাকিস্তানে ঘাঁটি রয়েছে তাও স্বীকার করে নিয়েছে ইসলামাবাদ। পাক প্রশাসনের তরফে সেই ঠিকানাও জানানো হয়েছে। করাচির সৌদি মসজিদের কাছে ক্লিফটন এলাকায় ‘হোয়াইট হাউস’ নামে একটি বাড়ি রয়েছে দাউদের। এ ছাড়া করাচিতেই তার আরও দু’টি ঠিকানার উল্লেখ করা হয়েছে।

পাক সরকারের তরফে ওই সব জঙ্গি নেতা এবং তাদের সংগঠনের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফ্রিজ করা হয়েছে ওই সব ব্যক্তি এবং সংগঠনগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। ইসলামাবাদের তালিকায় নাম রয়েছে আফগানিস্তানের তালিবানেরও। তাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে শান্তি আলোচনা চলছে আমেরিকার।

আরও পড়ুন: প্রণবের শারীরিক অবস্থা একই রকম, রয়েছেন ভেন্টিলেশনেই

২০০৮ সালে জলপথে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে হামলা চালিয়েছিল পাক জঙ্গিদের একটি দল। পাকিস্তানের মাটিতে বসেই ওই হামলার ছক কষেছিল হাফিজ সইদরা। হামলা চলাকালীন তার তদারকিও করা হয়েছিল পাকিস্তানে বসেই। সেই নাশকতার জেরে ১৬০ জনের মৃত্যু হয় মুম্বইয়ে। আহত হন বহু। গোটা দুনিয়ার সামনে ফের এক বার উঠে আসে সন্ত্রাসবাদের বীভৎস চেহারাটা। কিন্তু তা নিয়ে বিপুল তথ্য দিলেও বার বার তা এড়িয়ে গিয়েছে ইসলামাবাদ। ১২ বছর কেটে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি তারা। তাই এখন পাক প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দিহান নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদ এমন পদক্ষেপকে লোক দেখানো বলেই মনে করছেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement