National News

কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থ জোগানের পিছনে দিল্লির পাক দূতাবাস? এনআইএ-র তদন্তে বিস্ফোরক তথ্য

কোন পথে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে টাকা পৌঁছয়, তার শিকড় খুঁজতে গিয়েই নাম জড়িয়েছে পাক দূতাবাসের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৪৯
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

জম্মু-কাশ্মীরেবিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলির অর্থসাহায্য আসে নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের মাধ্যমে? এমনই বিস্ফোরক তথ্য পেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। দূতাবাসের পাশাপাশি পাক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে বাণিজ্য এবং হাওয়ালার মাধ্যমেও এই অর্থ আসে বলে খবর। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই মর্মে চার্জশিট দিতে চলেছে এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থার একাধিক শীর্ষ আধিকারিকের সূত্রে এই খবর মিলেছে। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির অর্থ সংস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’টি চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ। আরও একটি অতিরিক্ত চার্জশিট জমা পড়বে এই সপ্তাহের শেষেই।

Advertisement

জম্মু কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির পিছনে পাক মদত রয়েছে, ভারতের তরফে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দেওয়া, জঙ্গিদের সাহায্য করা থেকে শুরু করে নানা নাশকতামূলক কাজকর্মের অভিযোগও নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই সংগঠনগুলির অর্থ কোন পথে আসে, সে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ। সেই তদন্তেই উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। এনআইএ-র একটি সূত্রে দাবি, কী ভাবে নানা হাত ঘুরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির হাতে টাকা পৌঁছে যায়, তারও সুনির্দিষ্ট রুট ম্যাপ কার্যত বের করে ফেলেছেন তদন্তকারীরা।

কোন কোন সংগঠন বা নেতা নজরে রয়েছে এনআইএ-র? সূত্রের খবর, হুরিয়ত কনফারেন্স নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) প্রধান ইয়াসিন মালিক, জম্মু-কাশ্মীর ডেমোক্র্যাটিক ফ্রিডম পার্টির শাবির শাহ, দুখতারান-এ-মিল্লাতের আন্দ্রবি, অল অল পার্টিজ হুরিয়ত কনফারেন্সের সাধারণ সম্পাদক আলম এবং ব্যবসায়ী জহুর আহমেদ ওয়াটালির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে চলেছে এনআইএ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ফের রেপো রেট কমাতে পারে আরবিআই, আশায় শিল্পমহল

কোন পথে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে টাকা পৌঁছয়, তার শিকড় খুঁজতে গিয়েই নাম জড়িয়েছে পাক দূতাবাসের। এনআইএর ওই শীর্ষ আধিকারিকের সূত্রে খবর, নয়াদিল্লিতে পাক দূতাবাসে মাঝেমধ্যেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রণ করা হয় এই সব বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে। আর ওই সব পার্টিতেই যাবতীয় ‘লেনদেন’ চলে বলে জানতে পেরেছে এনআইএ। নিহত জঙ্গি পরিবারের সদস্যদের সাহায্যের নামে টাকা তোলে জঙ্গি সংগঠনগুলি। কিন্তু তার একটা অংশ চলে যায় সংগঠনের তহবিলে। আবার উপত্যকার পড়ুয়ারা পাকিস্তানে পড়াশোনা করতে যেতে চাইলে পাক হাই কমিশনে তার সুপারিশ ও তদ্বির করেন এই সব সংগঠনের নেতারা। বিনিময়ে ‘নজরানা’ পান তাঁরা। পাশাপাশি পাকিস্তানে পড়াশোনা করতে পাঠানোর জন্য ছাত্রদের কাছ থেকেও মোটা টাকা নিয়ে থাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা— চার্জশিটে অভিযোগ আনতে চলেছে এনআইএ।

তদন্তকারীদের দাবি, পুরোপুরি শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সংগঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি। মূলত পাক জঙ্গি সংগঠনের নির্দেশমতো কাজ করেন নেতারা। সেই মতো গ্রামে গ্রামে, ব্লকে ব্লকে গঠন করা হয় সদস্য বা ক্যাডারবাহিনী। তারা জঙ্গিদের কাজকর্মের প্রশংসা করা, কেউ মারা গেলে তাদের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করে দেশবিরোধী বক্তৃতা দেওয়া, যুবকদের জঙ্গিদলে নাম লেখানোর জন্য মগজ ধোলাইয়ের কাজ করেন এই নেতারা।

আরও পড়ুন: মুক্তি পেলেন জম্মুর রাজনৈতিক নেতারা, কাশ্মীরের নেতারা এখনও গৃহবন্দিই

তদন্তে নেমে এনআইএ-র আধিকারিকরা একাধিক সূত্র থেকে এই সব তথ্য পেয়েছেন বলে দাবি। হুরিয়ত নেতাদের ইমেল, প্রচুর ভিডিয়ো, টিভি সাক্ষাৎকার, বক্তৃতার অংশ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেছেন তাঁরা। জেকেএলএফ প্রধান ইয়াসিন মালিক কয়েক বছর আগে একটি টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈবার ক্যাম্পে গিয়েছিলেন এবং সেখানে ভাষণও দিয়ে এসেছেন। এনআইএ-র চার্জশিটে সেই বিষয়টিও উল্লেখ থাকছে বলে ওই সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement