ভারবহন ক্ষমতার তুলনায় বেশি লোক উঠে পড়াতেই কি ভেঙে পড়ল গুজরাতের সেতু? টুইটার থেকে প্রাপ্ত ছবি।
কেউ বলছেন গুজরাতের ভেঙে পড়া সেতুতে ৪০০ জন লোক ছিলেন, কেউ বলছেন সংখ্যাটা ১৫০। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি বিষয়ে একমত যে, ভারবহন ক্ষমতার তুলনায় সেতুটিতে সেই সময় অনেক বেশি লোক উঠেছিলেন। তবে সেই কারণেই ঝুলন্ত এই সেতুটি মাচ্চু নদীতে ভেঙে পড়েছিল কি না, তা জানা যাবে তদন্তের পর। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের পর পাঁচ দিন আগে নতুন করে চালু করা হয়েছিল সেতুটিকে। ছ’দিনের মাথাতেই ঘটে গেল বিপর্যয়। গুজরাতের মোরবি জেলায় সেতু-দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গুজরাত পুলিশের ডিজি জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গুরুতর আহত অবস্থায় বহু মানুষকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এখনও নিখোঁজ বহু। সেতুটি ভেঙে পড়ার পরই নদীতে পড়ে যাওয়া মানুষরা ভাঙা রেলিং ধরে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করেন। সেই ভয়ঙ্কর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে।
সামনেই গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবিবারই তিন দিনের গুজরাত সফরে এসেছেন মোদী। তার মধ্যেই এই বিপর্যয়। মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে গুজরাত সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বলে ঘোষণা করেছে।
রবিবার সন্ধেয় দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ছট পুজো উপলক্ষে বহু মানুষ রবিবার সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অপর একটি অংশ জানাচ্ছেন, সেতুর উপরে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই পর্যটক।দুর্ঘটনার পর নদীতে পড়ে যাওয়া অনেককেই উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চললেও, পরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশ গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। এখনও সেই উদ্ধারকাজ চলছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় অনেকগুলি অ্যাম্বুল্যান্সকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়ার পরে কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে আসার চেষ্টা করেন। কিছু মানুষকে ভাঙা সেতুর রেলিং ধরে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতেও দেখা যায়।
ঘটনার পরই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি রাজ্য প্রশাসনকে উদ্ধারকাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে প্রধীনমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, “দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য এবং পরিস্থিতির দিকে সজাগ নজর রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।”