তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ উত্তর ভারতের মানুষ, অসুস্থ হয়ে গাজ়িয়াবাদের হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক। — ফাইল ছবি।
প্রবল গরমে জ্বলছে, পুড়ছে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা। তাপমাত্রা প্রায় সর্বত্রই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হল, তাপমাত্রা কমার কোনও লক্ষণ আপাতত নেই। আর তাপপ্রবাহের জেরে অসুস্থ হচ্ছেন বহু মানুষ। শুধুমাত্র মঙ্গলবারই গাজ়িয়াবাদের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ১১০০ মানুষ গিয়েছেন তপ্ত আবহাওয়াজনিত সমস্যার চিকিৎসা করাতে। তাঁদের মধ্যে শতাধিক মানুষের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাঁদের ভর্তি করিয়ে নিতে হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলিও ভেসে যাচ্ছে হিট স্ট্রোক, ডায়েরিয়া, সান স্ট্রোকের রোগীতে।
উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান-সহ বিস্তীর্ণ উত্তর ভারতে দাপট দেখাচ্ছে সূর্য। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত মানুষের। মঙ্গলবার পরিস্থিতি এমন হয় যে গাজ়িয়াবাদের সরকারি হাসপাতালগুলিতে হিট স্ট্রোক এবং ডায়েরিয়ার সমস্যা নিয়ে রোগীদের ভিড় হয়ে যায়। সেই লাইনে দাঁড়াতে গিয়ে অনেকে জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, দেহ যখন অতিরিক্ত রকম উত্তপ্ত হয়ে যায় এবং সেই তাপ দেহ থেকে বেরোতে পারে না, তখন হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও তা না কমলে দৈহিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, হতে পারে মৃত্যুও। এই তাপপ্রবাহে মানুষের হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সারা দিনে ১১০০ মানুষ গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে সরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালেও একই চিত্র।
গাজ়িয়াবাদের সরকারির হাসপাতালগুলিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই এমন রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। অনেকেই এসে হাসপাতালে রোগী দেখানোর লাইনে অপেক্ষা করতে করতেই জ্ঞান হারান। তখন তাঁদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, গাজ়িয়াবাদের বিভিন্ন রাস্তার জংশনে জলের ট্যাঙ্ক রাখা হয়েছে। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানুষকে জল খাওয়ানোর কাজ করছে। তবুও অসুস্থ হয়ে পড়া আটকানো যাচ্ছে না। প্রশাসন বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে নিষেধ করছে। কিন্তু একান্ত প্রয়োজনে যাঁরা বাইরে বেরোচ্ছেন, তাঁরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
জেলাশাসক আরকে সিংহ সতর্কতা জারি করেছেন। সেখানে মানুষকে পর্যাপ্ত জল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ছাতা ব্যবহার করার।