North India Weather

বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতিতে দেশে মৃত একশোরও বেশি, শুধু হিমাচলেই মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের

হিমাচলের আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত ১-১১ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৪৯.৬ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ২২৬ শতাংশ বেশি। কিন্নৌরে ৫০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ১০:০৯
Share:

হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে বিতস্তা নদীর জল। ছবি: পিটিআই।

প্রবল বৃষ্টি এবং তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি, ধসের কারণে উত্তর ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে শুধু হিমাচল প্রদেশেই এক সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের।

Advertisement

গত চার দিন ধরে উত্তর ভারত জুড়ে টানা বৃষ্টির জেরে হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশি, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের মধ্যে যে সব রাজ্যগুলি বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝছে, তার মধ্যে হিমাচল প্রদেশের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। পাহাড়ি ধস, হড়পা বান, জাতীয় সড়ক, সেতু ভেসে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে সেখানে।

হিমাচলের মধ্যে আবার ভয়াবহ পরিস্থিতি মান্ডি, উনা, হামিরপুর, বিলাসপুর, চম্বা, কাংড়া এবং কুলু, সিরমুর, কিন্নৌর, শিমলা। রাজ্যের সমস্ত নদীগুলি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ইরাবরতী, বিতস্তা, শতদ্রু এবং চন্দ্রভাগা নদী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সোলান উপত্যকায় রবিবারই ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বৃষ্টি। ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সোলানে। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম।

Advertisement

হিমাচলের আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত ১ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৪৯.৬ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ২২৬ শতাংশ বেশি। কিন্নৌরে ৫০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সোলানে ৪২৬ শতাংশ, সিরমুরে ৩৬৭ শতাংশ, শিমলায় ৩৬০ শতাংশ, বিলাসপুরে ৩২৫ শতাংশ, লাহুল এবং স্পিতিতে ২৩৩ শতাংশ, মান্ডিতে ১৩০ শতাংশ। দুর্যোগের জেরে হিমাচলের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে রয়েছে ৩০০ পর্যটক। রাজ্যের ৪১টি জায়গায় ধস এবং একটি জায়গায় মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। ২৯টি জায়গায় হড়পা বান হয়েছে।

মৌসম ভবন ২৪টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব এবং দিল্লিতে। বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য কমবে হিমাচলে। এমনটাই জানিয়েছে মৌসম ভবন। তবে বৃষ্টি পরিমাণ বাড়বে উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে। পঞ্জাবে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। হরিয়ানায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত। পঞ্জাবের সাঙ্গরুরে ঘর্ঘরা নদীর বাঁধ ভেঙে বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

অন্য দিকে, উত্তরাখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় বহু জায়গায় ধস নেমেছে। ধসের কারণে আহত হয়েছেন ১৩ জন। বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ন’জন পুণ্যার্থীর। বুধবার রাজ্যের চারটি জেলা— নৈনিতাল, উধম সিংহ নগর, চম্পাবৎ এবং পৌড়ি গঢ়বালে অতি ভারী বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। অন্য দিকে, হরিদ্বার, দেহরাদূন, টিহরী গঢ়বাল, রুদ্রপ্রয়াগ এবং উত্তরকাশীতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগের জেরে কেদারনাথ যাত্রা আবার স্থগিত করা হয়েছে। সোনপ্রয়াগ এবং গৌরীকুণ্ডে প্রবল বৃষ্টির কারণে আটকে পড়ছেন পুণ্যার্থীরা। উত্তরাখণ্ড প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের কেদারনাথ যাত্রায় অনুমতি দেওয়া হবে না।

দিল্লিতে যমুনা নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। জলস্তর ২০৫ মিটার ছাড়িয়ে গিয়েছে। হরিয়ানার হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে জলা ছাড়ার ফলে দিল্লির নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে। রাজধানীতে বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতির কারণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement