প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
নতুন করে তৃণমূল কংগ্রেস মহিলা সংরক্ষণের দাবি তুলে মোদী সরকারের কোর্টে বল ঠেলে দিল। নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনে সাফল্যের পিছনে মহিলাদের ভোটকে অন্যতম কারণ বলে মনে করে বিজেপি। সেই মোদী সরকারে কোর্টেই বল ঠেলে দিয়ে আজ তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সক্রিয়। মোদী সরকার এ বিষয়ে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা করছে না কেন?
লোকসভা থেকে বিধানসভায় মহিলাদের জন্য তিনভাগের এক ভাগ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে আইন তৈরির দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে বিজু জনতা দল, শিরোমণি অকালি দলও। মনমোহন সিংহের সরকার মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত তাতে সফল হয়নি। সে সময় নীতীশ কুমারের জেডিইউ এর বিরোধিতা করলেও এখন তারাও এর পক্ষে। তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন করা হচ্ছে, বিজেপি, কংগ্রেস, ডিএমকে, তৃণমূলের মতো বড় দলগুলি রাজি থাকা সত্ত্বেও কেন মহিলা বিল পাশ করানো হচ্ছে না?
আগামিকাল থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। তার আগে আজ কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। বিজেডি সেখানে মহিলা সংরক্ষণ বিলের প্রসঙ্গ তোলে। সন্ধ্যায় লোকসভার কার্যসূচি উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা সংরক্ষণ বিলের দাবি তোলেন। জেডিইউ সমর্থন করায় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আরজেডি-র অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জেডিইউ-র নেতা রাজীবরঞ্জন সিংহ বলেন, সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেই কার কী অবস্থান রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আগামিকাল থেকে শুরু হয়ে শীতকালীন অধিবেশন ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলার কথা। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, ভোটের জন্য অধিবেশন পিছিয়ে দিয়ে কেন বড়দিনের উৎসবের সময়ও সংসদ চলছে? জোশী বলেন, ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর এমনিতেই শনি-রবিবারের ছুটি থাকবে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব এবং কেরলের সাংসদরা ২৩ তারিখেই অধিবেশনে ইতি টানার দাবি তোলেন। আবার বেশিদিন সংসদ না চললে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো কীভাবে তোলা যাবে, সেই প্রশ্নও ওঠে। বিরোধীরা এ বিষয়ে বলেন, এমনিতেই সংসদে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে না। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।
বিরোধী শিবির থেকে আজ বেকারত্ব, চিনের সেনার ভারতের জমি দখল, কলেজিয়ামকে মন্ত্রীর নিশানা, ইডব্লিউএস কোটা ও জাতিগণনা, নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগে তাড়াহুড়োর মতো বিষয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে। একনাথ শিন্ডের শিবসেনা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইনের দাবি তুলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা ছাড়াও আজ তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অষ্টম তফসিলে মেঘালয়ে গারো-খাসি ভাষার অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলেন। সূত্রের খবর, যা শুনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা হাসি মুখে মন্তব্য করেন, ‘মেঘালয়ে ভোট আসছে!’ সুদীপ বলেন, তৃণমূল ত্রিপুরাতে ব্যর্থ হলেও মেঘালয়ে জিতবে। স্পিকার বলেন, তৃণমূল এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কথাও বলতে চায়।