Maha Kumbh Stampede 2025

আত্মপ্রচার এবং ভিআইপি নিরাপত্তাতেই জোর, কুম্ভের দুর্ঘটনায় সরব বিরোধীরা! মমতা টানলেন গঙ্গাসাগর

মঙ্গলবার মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে ত্রিবেণী সঙ্গমে যে কয়েক কোটি মানুষ জড়ো হবেন, তা আগে থেকেই আঁচ করা গিয়েছিল। তার পরেও কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা ছিল না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৪
Share:

(বাঁ দিক থেকে) মল্লিকার্জুন খড়্গে, অখিলেশ যাদব এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনার পর ১০ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। ঘটনাস্থল জুড়ে বর্তমানে শুধুই হাহাকার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শশব্যস্ত প্রশাসন। সেই আবহেই এ বার সরব হলেন বিরোধীরা। আঙুল উঠল উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের দিকে।

Advertisement

মঙ্গলবার মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে ত্রিবেণী সঙ্গমে যে কয়েক কোটি মানুষ জড়ো হবেন, তা আগে থেকেই আঁচ করা গিয়েছিল। তার পরেও কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা ছিল না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েই। এ জন্য সরাসরি উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে দায়ী করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবি, প্রস্তুতির বদলে আত্মপ্রচারকে ‘পাখির চোখ’ করে এগোনোর জেরেই এত বড় দুর্ঘটনা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর কথায়, ‘‘অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা, সাধারণ মানুষের তুলনায় ভিআইপিদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া— এ সবের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র বিশেষ ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া এ বার বন্ধ করা উচিত। ভবিষ্যতে আর যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্যও যথাযথ পদক্ষেপ করা উচিত সরকারের।’’ একই সুর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের গলাতেও। দুর্ঘটনার পরেই খড়্গে বলেন, ‘‘যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা, ভিআইপিদের অগ্রাধিকার দেওয়া, ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে আত্মপ্রচারে জোর দেওয়া, এ সবই দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেও এ রকম ব্যবস্থাপনা আশা করা যায় না! এ বার অন্তত কেন্দ্র ও রাজ্যের চোখ খুলুক!’’

অন্য দিকে, এ রাজ্যের গঙ্গাসাগর মেলার উদাহরণ দিয়ে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে মমতার পোস্ট, ‘‘কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনায় অনেকের মৃত্যুর খবর শুনে আমি মর্মাহত। নিহতদের শোকস্তব্ধ পরিজনদের সমবেদনা জানাই। আমাদের গঙ্গাসাগর মেলা থেকে শিখেছি, এ ধরনের বিপুল জনসমাগমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দরকার হয়। নিহতদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা রইল।’’

Advertisement

যোগী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও। তাঁর দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহাকুম্ভে আসা সাধুসন্ত ও পুণ্যার্থীদের আস্থা ফেরাতে রাজ্য সরকারের উচিত অবিলম্বে সেনার হাতে মেলাপ্রাঙ্গণের দায়িত্বভার তুলে দেওয়া। অখিলেশের কথায়, ‘‘বিশ্বমানের ব্যবস্থাপনা বলে প্রচার চালানো হয়েছিল। কোথায় সে সব? এ বার সকলের সামনে প্রকৃত সত্য চলে এসেছে। যাঁরা মিথ্যা দাবি করেছিলেন, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিলেন, তাঁদের সকলকে এই মৃত্যুর দায় নিতে হবে। তাঁদের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত!’’

যদিও ঘটনার পরেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসনকে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে যোগীকে চার বার ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহও যোগীকে ফোন করে পরিস্থিতির খবরাখবর নিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন, কেন্দ্রের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে।

উল্লেখ্য, সোমবার গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী— তিন নদীর সঙ্গমে ডুব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরিবারকে নিয়েই প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন শাহ। পুণ্যস্নানের সময় সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং যোগগুরু রামদেবও। যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ভোটের দিন মহাকুম্ভে তিনি যেতে পারেন বলে খবর। তাবড় নেতাদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সে দিকেই ইঙ্গিত বিরোধীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement