প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
মোদী সরকারের পেশ করা ‘জন বিশ্বাস’ বিল নিয়ে আগামী সোমবার যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক উত্তাল হতে চলেছে। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধীদের বড় অংশ মনে করছে, কর্পোরেটদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই আইন আনতে চলেছে সরকার। তাদের অভিযোগ, সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরাধকে লঘু করে কারাবাসের নিদান তুলে দিয়ে বড় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে দেদার মুনাফার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
সরকারপক্ষ অভিযোগ উড়িয়ে বলেছে, সামান্য অপরাধে জেল খাটার শাস্তি তুলে দিয়ে শুধু জরিমানার শাস্তি রাখলে সুবিধা। তাতে মামলা-মোকদ্দমার পাহাড় কমবে। জীবনযাত্রাও সহজ হবে। ১০৮ পাতার এই বিলে ৪২টি আইনের ১৮৩টি ধারা সংশোধন করার প্রস্তাব রয়েছে। বিলটি পর্যালোচনার জন্য লোকসভা ও রাজ্যসভার ৩১জন সদস্য নিয়ে যৌথ কমিটি তৈরি হয়েছে। ১৩ মার্চের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কমিটিকে বেশি সময় না দেওয়ার অর্থ তাড়াহুড়ো করে তা পাশ করাতে চাইছে কেন্দ্র।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্য, ‘ইজ অব বিজনেস’-এর নামে বেশ কিছু বড় অপরাধের সাজা লঘু করে দেওয়া হচ্ছে। বিলের যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রধানত সরকারকে আক্রমণ করতে চান বিরোধীরা, সেগুলির অন্যতম কৃষিপণ্যের মানগত সরকারি সিলমোহর (গ্রেড) জাল করে বাজারে বিক্রি করা। এই অপরাধে এখনও পর্যন্ত তিন বছর পর্যন্ত কারাবাস এবং পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হওয়ার কথা। প্রস্তাবিত আইনে বলা হচ্ছে, হাজতবাস তুলে দিয়ে জরিমানা বাড়িয়ে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হবে। তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০০ অনুযায়ী, গোপন তথ্য ফাঁস করলে সাজা তিন বছর পর্যন্ত হাজতবাস এবং পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ধার্য। প্রস্তাবিত আইনে কারাবাসের বদলে ২৫ লক্ষ পর্যন্ত জরিমানা রাখা হয়েছে। ভারতীয় কৃতিস্বত্ব (পেটেন্ট) আইন ১৯৭০ অনুযায়ী সরকারের কাছ থেকে কৃতিস্বত্ব না নিয়ে, ভুয়ো ছাপ দিয়ে বিক্রি করলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ছিল। এ ক্ষেত্রে এককালীন জরিমানা নিয়ে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কারাগারে যাওয়ার ভয় না থাকলে, খাদ্যপণ্যে ভেজাল মিশিয়ে ভুয়ো মার্কা দিয়ে বিক্রির সাহস আরও বাড়বে।