সংসদের বাইরে মোদী-বিরোধিতার কৌশল রচনা চলল। ফাইল চিত্র।
আজ সংসদের ভিতরে হইচই করে বার বার অধিবেশন মুলতুবি করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখলেন বিরোধীরা। সেই সঙ্গে সংসদের বাইরেও মোদী-বিরোধিতার কৌশল রচনা চলল।
সংবিধান, সংসদ, গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে বাঁচানোর দাবিতে সকালেই সংসদ চত্বরে ভীমরাও অম্বেডকরের মূর্তির সামনে ধর্না দেন তৃণমূল সাংসদরা। ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, জহর সরকার, শান্তা ছেত্রী, সুস্মিতা দেব, মৌসম নুর, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আর কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে বসে পরবর্তী কৌশল স্থির করতে। ওই বৈঠকে তৃণমূলের উপস্থিতি না থাকলেও তা গত কয়েক দিনে তৈরি হওয়া বিরোধী ঐক্যে চিড় বলে মনে করছে না কোনও দলই। আজ যে হেতু কলকাতায় অম্বেডকরের মূর্তির সামনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু’দিনব্যাপী ধর্না শুরু হল, তাই দলের সাংসদেরা দিল্লিতে একই কর্মসূচি পালন করলেন।
পরে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নিজে সংসদে প্রশ্নের উত্তর দিলেন না। তিনি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেও অধিবেশনের জট খোলার চেষ্টা করতে পারতেন। সে চেষ্টাও তাঁর তরফে দেখা গেল না। ফলে এ বারের অধিবেশনে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাচ্ছে।”
সূত্রের খবর, আজ সকালে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে, আগামী সপ্তাহেই বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব প্রাথমিক ভাবে উঠে আসে। তবে অন্য একটি সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হয়। এখনও পর্যন্ত বিরোধী দলগুলির সংসদীয় নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সেখানে অন্য নেতাকেও পাঠিয়েছে কোনও দল (তৃণমূল)। তা নিয়ে বিশেষ সমস্যা হওয়ার কথা নয়, হয়ওনি। কিন্তু যখন দলের নেতাদের ডাকা হবে, সেখানে শীর্ষ নেতার বদলে অন্য নেতা এলে তা খুবই বিসদৃশ দেখাবে। প্রশ্ন উঠবে এবং বিজেপি প্রচারের সুযোগ পেয়ে যাবে। ফলে বিরোধী নেতাদের বৈঠক ডাকা হবে ঠিকই, কিন্তু তা নিয়ে তাড়াহুড়ো কংগ্রেস করতে চাইছে না। স্থির হয়েছে বৈঠক এপ্রিলেই করার চেষ্টা হচ্ছে কিন্তু আগামী সপ্তাহেই নয়। বরং কংগ্রেস বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলার জন্য যে সমন্বয় কমিটি তৈরির কথা ভাবছিল, এখন সেটি গঠনেই উদ্যোগী হবে।
কংগ্রেসের সঙ্গে শিবসেনা (ইউবিটি)-র সাভারকর সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে যে মতপার্থক্য হয়েছিল সেটিও মিটে গিয়েছে। আজ উদ্ধব ঠাকরেপন্থী শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত আলাদা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বিরোধীদের বৈঠকেও ছিলেন। পরে বলেন, “আমাদের সমস্যার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। অবশ্যই মহারাষ্ট্রে এবং জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্য মজবুত করব আমরা।”