Congress

TMC: বিরোধীদের মুখে ইডি, তৃণমূলের অস্ত্র মেঘালয়

রাজনৈতিক মহলের মতে, শুধু তা-ই নয়, এই ‘নীরবতা’ নিয়ে অস্বস্তি এড়াতে আজ একটি অভিনব পদক্ষেপ করতেও দেখা গেল বঙ্গের শাসক দলকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২২ ০৬:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

সাম্প্রতিক সংসদীয় অধিবেশনগুলিতে তৃণমূলের কেন্দ্র-বিরোধী আক্রমণের অন্যতম অস্ত্র ছিল সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থাগুলির অপব্যবহার। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে গিয়ে চলতি বাদল অধিবেশনে এই নিয়ে মুখে কুলুপ তৃণমূল সাংসদদের।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের মতে, শুধু তা-ই নয়, এই ‘নীরবতা’ নিয়ে অস্বস্তি এড়াতে আজ একটি অভিনব পদক্ষেপ করতেও দেখা গেল বঙ্গের শাসক দলকে। আজ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর ইডি-তে হাজিরা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংসদের ভিতরে ও বাইরে প্রতিবাদে উত্তাল হল কংগ্রেস। সঙ্গে এনসিপি, ডিএমকে, বাম এবং অন্য কিছু বিরোধী দল স্লোগান তুলল, ‘ইডি মোদী ডাউন ডাউন’। সেখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুপস্থিত দল তৃণমূল কংগ্রেস। তারা তখন বিজয় চকে ব্যস্ত মেঘালয়ের বিধায়কদের নিয়ে গারো এবং খাসি ভাষাকে অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে! পরে এই নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তৃণমূল নেতারা।

রাষ্ট্রপতিকে আজ যে দু’টি বিষয় নিয়ে (সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে আলোচনা করছে না সরকার) চিঠি দেওয়ার জন্য কংগ্রেস মিছিল করে যায় (মাঝপথে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়), তাতে তৃণমূল বাদে আর সব উল্লেখযোগ্য বিরোধী দলনেতার সই রয়েছে। আজ দিল্লির চারদিকে ইডি, সিবিআই নিয়ে বিরোধী স্বর উঠলেও তাকে এ ভাবেই এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুধু মূল্যবৃদ্ধি এবং জিএসটি নিয়েই রাজ্যসভায় হইচই করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। ওয়েলে নেমে চিৎকারের জেরে তৃণমূলের সাত সাংসদকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে এই সপ্তাহের জন্য।

Advertisement

তৃণমূল কেন রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে সই করল না? কেনই বা ইডি, সিবিআই-কে নিয়ে প্রতিবাদে কণ্ঠ মেলাল না, অথচ এই নিয়ে তৃণমূলীদের হয়রানির অভিযোগ সাম্প্রতিক অতীতে ভুরি ভুরি? জবাবে রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “প্রতিবাদের বিষয় তো অনেকই আছে। কোনও বিষয়ই খারাপ নয়। কিন্তু প্রত্যেক দলের নিজস্ব অগ্রাধিকার থাকে। এই মুহূর্তে আমাদের অগ্রাধিকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয়।” তিনি এ কথাও জানান, কংগ্রেসের সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনী জোটে থাকা রাজনৈতিক দলগুলির (এনসিপি, ডিএমকে) অন্য বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল, কংগ্রেসের উপরে নির্ভরশীল দল নয়। ফলে নিজেদের সংসদীয় কর্মসূচি অন্য কোনও দলের সাপেক্ষে তৈরি করাহয় না।

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে অবশ্য ছাড়েনি কংগ্রেস। সংসদীয় দলের এক নেতা বলেন, “সরকার সবার পিছনে সিবিআই, ইডি লেলিয়ে দিয়ে আসলে বিরোধীদের এককাট্টা করতে চেষ্টাই করছে! কিন্তু তা সত্ত্বেও তৃণমূল একজোট হতে চাইছে না!” দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ হালকা চালে বলছে, আজ তৃণমূল হঠাৎ করে মেঘালয়ের সমস্যা দিল্লিতে নিয়ে এসে একসময় সিপিএমের কৌশলই নিচ্ছে। তাদের বক্তব্য, সিপিএম যখন রাজ্য রাজনীতিতে বিপাকে পড়ত, তখন আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদ অথবা উগান্ডার সমস্যার মতো বিষয়কে সামনে নিয়ে এসে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করত!

আজ ডেরেকের পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মেঘালয় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল সাংমা। তার আগে মেঘালয়ের গারো ও খাসি ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে একযোগে সরব হয়েছেন মুকুল, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, মালা রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক, মহুয়া মৈত্ররা। অসম-মেঘালয় সীমানা চুক্তি বাতিল নিয়েও কেন্দ্রের কাছে মেঘালয়ের নেতারা দাবি তুলেছেন। সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে মুকুল বললেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত মেঘালয়বাসী। অনেক কিছু আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের দাবিগুলি এ বার পূরণ করতে হবে কেন্দ্রকে। সেই বার্তাই দিতে এসেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement