Bihar Assembly Election

যোগী ও পাক তাসে ফাঁপরে মহাজোটই

বিহার ভোটে বিজেপি এ ভাবেই ‘যোগী-পাকিস্তান-কাশ্মীর’-এর অস্ত্রে শান দিতে শুরু করল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

বিহারে যোগী আদিত্যনাথের চাহিদা তুঙ্গে। মঙ্গলবার থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিহারে গিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করছেন। অন্তত ১৮ থেকে ২০টি জনসভা করবেন যোগী। তার আগে থেকেই রাহুল গাঁধী আর শশী তারুরের মুখে ‘পাকিস্তানের প্রশংসা’ নিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন পি চিদম্বরম। খোদ অমিত শাহ সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, তাঁরা ৩৭০ নিয়ে চিদম্বরমের দাবিকে সমর্থন করে দেখান।

Advertisement

বিহার ভোটে বিজেপি এ ভাবেই ‘যোগী-পাকিস্তান-কাশ্মীর’-এর অস্ত্রে শান দিতে শুরু করল। উল্টো দিকে আরজেডি-কংগ্রেস নেতৃত্ব বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা ও নীতীশ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে হাতিয়ার করতে চাইছেন। কিন্তু প্রমাদ গুনে এখন তাঁদের আশঙ্কা, আমজনতার সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোই বিজেপি, জেডি-ইউ জোটের কৌশল।

রবিবার ‘মহাগঠবন্ধন’-এর কংগ্রেস ও আরজেডি, দুই দলই নিজেদের প্রচারের ‘থিম সং’ প্রকাশ করেছে। কংগ্রেসের ‘বোলে বিহার, অব কে বদলে সরকার’ গানের সঙ্গে ভিডিয়োর সিংহভাগ জুড়েই পায়ে হেঁটে গ্রামে ফিরতে বাধ্য হওয়া বিহারি শ্রমিকদের দুরবস্থার ছবি। আরজেডি-র গানের ভিডিয়োতে তেজস্বী যাদবের সেই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর ছবি।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণের কথা মেনে নিলেন হর্ষ বর্ধন​

আরও পড়ুন: মানুষের সমস্যা প্রচারে ধরতে নির্দেশ সনিয়ার​

উল্টো দিকে বিজেপি ব্যস্ত থেকেছে রাহুল-শশীর ‘পাকিস্তান প্রশংসা’ নিয়ে। রাহুল আগেই আইএমএফ-এর রিপোর্ট তুলে ধরে বলেছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার পাকিস্তান এ বছর ভারতের থেকে এগিয়ে থাকবে। পাকিস্তান কোভিড নিয়ন্ত্রণে তুলনায় ভাল কাজ করেছে। এ বার কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও ভিডিয়ো কনফারেন্সে লাহৌরের একটি সাহিত্য উৎসবে যোগ দিয়ে একই মন্তব্য করেছেন। তবলিগি সদস্যদের উপরে করোনা ছড়ানোর দায় চাপিয়ে মেরুকরণে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছিল বলেও তাঁর দাবি।

এতেই অস্ত্র পেয়ে গিয়েছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের প্রশ্ন, ‘‘রাহুল গাঁধী কি পাকিস্তান থেকে ভোটে লড়বেন? রাহুল গাঁধীর নাম এখন থেকে রাহুল লাহৌরি হল। শশী তারুর ওঁর হয়েই লাহৌরে জনসভা করছেন। উনি দেশের অপমান করছেন।’’ রাহুলের পক্ষে মুখ খুলে রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলটের মন্তব্য, ‘‘জিন্নার প্রশংসা করার জন্য আডবাণী, লাহৌর বাসযাত্রা করে জেনারেল মুশারফকে আগরায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাজপেয়ী এবং নওয়াজ শরিফের নাতনির বিয়েতে উপহার নিয়ে পৌঁছনোর জন্য মোদীজির জন্যও তা হলে নতুন নাম ঠিক হোক।’’

হাথরসের ঘটনা এবং যোগীর পুলিশের হাতে প্রিয়ঙ্কা-রাহুলের হেনস্থাকেও প্রচারে আনবে ভেবেছিল কংগ্রেস-আরজেডি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি বিজেপি প্রার্থী যোগীকেই তাঁর কেন্দ্রে প্রচারে চাইছেন। এমনকি জেডি-ইউ প্রার্থীরাও চান, যোগী তাঁদের হয়ে প্রচারে নামুন। আপাতত মঙ্গলবার থেকে শুরু করে যোগী ছ’দিন বিহারে প্রচারে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত তিনটি করে জনসভা করবেন।

কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এ থেকেই বিজেপির আসল চরিত্র ফুটে ওঠে। যাঁরা বিভাজন, উস্কানি, সমাজে আগুন লাগানোর কথা বলেন, তাঁরাই বিজেপিতে গুরুত্ব পান। বিধানসভা ভোটে পাকিস্তানকে টেনে আনাও বিজেপির পুরনো কৌশল।’’ কিন্তু ২০১৭-র গুজরাতের মতো বিহারেও বিজেপি পাকিস্তানের নামে মেরুকরণ করলে, কংগ্রেস কী জবাব দেবে? কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, তাঁরা মানুষের সমস্যাই তুলে ধরবেন। চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেসিন্ডা আর্ডের্নের নির্বাচন দেখে আশা করা যায়, ভদ্রতা ও প্রগতিশীল মূল্যবোধ ভোটে জেতাতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement