বৈঠকে: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে ১৭টি বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠকে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। রয়েছেন জেডিইউয়ের প্রাক্তন সভাপতি শরদ যাদব, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে, বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী বাছার জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর ডাকা বৈঠকে নবীন পট্টনায়েকের বিজেডি এবং এডিএমকে-র কেউ ছিলেন না। কৌশলী নীতীশ কুমারের দল থেকে এসেছিলেন শরদ যাদব।
বাকি সব বিরোধী দলের নেতারাই এসেছিলেন। লালু প্রসাদ, অখিলেশ সিংহ যাদব, ওমর আবদুল্লা, মায়াবতী, সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পওয়ার, শরদ যাদব তাঁদের অন্যতম। ঘটনা হল, গত বারে এঁরা প্রত্যেকেই প্রণববাবুর নামে সম্মতি জানিয়েছিলেন।
সে বার শিবসেনার মতো এনডিএ শরিকও সমর্থন করেছিল প্রণবাবুকে। ফলে আজ বিরোধীদের নেওয়া এই অবস্থানে বিজেপির উপরেও একটা চাপ তৈরির কৌশল নিলেন বিরোধীরা। বিরোধীদের উদ্দেশ্য প্রণববাবুকেই দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতি করা। কিন্তু শাসক শিবির থেকে অন্য নাম এলে বিরোধী প্রার্থী দিয়ে ভোটে যাবেন তাঁরা। এর জন্য গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর সঙ্গে বামেরা প্রাথমিক কথা বলেছেন। পরিস্থিতি সাপেক্ষে এই নামে সায় রয়েছে সনিয়া-মমতারও।
কিন্তু মোদী সরকার যদি দেশের প্রথম আদিবাসী রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মুর মতো কাউকে প্রার্থী করে? ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নটি সে ক্ষেত্রে ভোঁতা করে দিতে পারবেন মোদী। আর রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদে আসীন কারও সংবিধান সম্পর্কে জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলাও সহজ হবে না। তাই দলিত নেত্রী তথা প্রাক্তন স্পিকার মীরাকুমারের নামও ভেবে রেখেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন:বিতর্কও কুড়িয়েছিলেন প্রয়াত ‘সুপার কপ’ গিল
কিন্তু প্রশ্ন হল, বিরোধী শিবিরের নেতারা কেন শাসক দলের প্রার্থীর জন্য অপেক্ষা করতে চাইছেন?
বৈঠক থেকে বেরিয়ে এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা তো নতুন কিছু নয়। বাজপেয়ীজিও যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলেই সর্বসম্মত ভাবে এ পি জে আব্দুল কালামকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করা হয়েছিল। গণতন্ত্রে এটা হতেই পারে।’’
প্রণববাবুকেই কি তা হলে তাঁরা রাষ্ট্রপতি পদে দ্বিতীয় বারের জন্য দেখতে চাইছেন? মমতা বলেন, ‘‘আমি এখনই কী-ই বা বলতে পারি? বল এখন সরকারের কোর্টে।’
বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপি কোর গ্রুপে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর পরে এনডিএ শরিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বিজেপি নেতৃত্ব। এবং সব শেষে তাঁরা কথা বলবেন বিরোধীদের সঙ্গে।
বিরোধীরা প্রথম পছন্দ হিসেবে প্রণববাবুকে আর এক দফায় রাষ্ট্রপতি পদে চাইলেও তিনি এ দিন উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর। ক’দিন আগেই ইন্দিরা গাঁধীকে তিনি দেশের ‘সব চেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রধানমন্ত্রী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। আজ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’-এর সংকলন প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘দেশবাসীর কাছে কার্যকর ভাবে নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে তিনি দক্ষ। নতুন দিশা দিয়েছেন দেশের অর্থনীতিকে।’’ যা ‘জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে তুলনীয়’ বলেও মন্তব্য করেন প্রণববাবু।