অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।
অর্থনীতি কেন ঝিমিয়ে পড়ছে, তার দাওয়াই ঠিক করার আগে রোগের কারণ খুঁজতে কলকাতাতেও যাবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
দিল্লিতে বসে শিল্পমহল, ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার, বিদেশি লগ্নিকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরে এ বার অর্থমন্ত্রী রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে অর্থনীতির সঙ্কট বোঝার চেষ্টা করছেন। শুরু করেছেন আমদাবাদ থেকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের আশ্বস্ত করতে জানিয়েছেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উপায় খুঁজতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের আলোচনা চলছে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নির্মলা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে। তার পরে তাঁর সফর তালিকায় রয়েছে কলকাতা, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, কানপুর, হায়দরাবাদ, মাইসুরু ও পুণে। তা দেখে আজ কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, গাড়ি বা ফ্ল্যাট বাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার মাধ্যমে অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়ার লক্ষণ যে হঠাৎ এখনই ফুটে উঠছে, তা তো নয়। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই এই পরিস্থিতি। তার পরে তো মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে জুলাই মাসে বাজেট পেশ করেছিল। সেই বাজেটে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘মোদী সরকার এত দেশভক্তির কথা বলছে, দেশের অর্থনীতির জন্য কিছু করছে না কেন?’’ সংসদের ভিতরে মোদী সরকারের সংখ্যার জোর এবং বাইরে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ফলে বিরোধীদের কোমর ভাঙা অবস্থা হলেও কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত, মোদী সরকার অর্থনীতির দুর্দশা থেকে নজর ঘোরাতে চাইলেও তাঁরা নিয়মিত অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। আজ তাই শুরুতেই কংগ্রেস দেশে আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে বলে অভিযোগ তুলে দিয়েছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘ভার্চুয়াল রিয়ালিটি’-তে অন্য কিছু দেখাতে চাইলেই বাস্তব একেবারে আলাদা। গাড়ি শিল্পে ধস নেমেছে। সর্বোপরি ট্রাক্টর বিক্রি এপ্রিল-জুনে গত বছরের এপ্রিল-জুনের তুলনায় ১৪.১ শতাংশ কমেছে, যা থেকে গ্রামীণ অর্থনীতি এবং চাষিদের করুণ অবস্থার ছবি স্পষ্ট। কংগ্রেসের প্রশ্ন, এমন অবস্থায় মোদী কী ভাবে ২০২২-এর মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলছেন? কোন পথেই বা ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হবে?
বাজেটের পর থেকে শেয়ার বাজারেও ধস নেমেছে। মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘লগ্নিকারীদের ১৩ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এতে দেশের অর্থনীতির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। রাজকোষ ঘাটতি নিয়েও সরকার প্রতারণা করছে। সিএজি বলছে, রাজকোষ ঘাটতি সরকারের হিসেবের তুলনায় অনেক বেশি।
বৃদ্ধির হার জানুয়ারি-মার্চে ৫.৮%-এ নেমেছে। যা মোদীর প্রথম জমানায় সর্বনিম্ন। ভোটের আগে সরকার বেকারত্বের হার ধামাচাপা দিয়েছে। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ছুঁতে না পেরে কর সন্ত্রাস শুরু হয়েছে।’’