Narendra Modi

ক্যাপিটলে হামলা নিয়ে বিরোধীদের নিশানায় মোদী

অনেকে গুজরাত দাঙ্গা এবং রাজধানী দিল্লিতে গত বছরের গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনেও বিঁধেছেন মোদীকে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:১১
Share:

ক্যাপিটলের সামনে বিক্ষোভে ভারতের জাতীয় পতাকাও। ছবি: টুইটার।

ওয়াশিংটনের ক্যাপিটলে ট্রাম্পপন্থীদের হামলার নিন্দা করে আজ সকালেই টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার পরেই বিরোধী শিবির থেকে উড়ে এল ‘আগলি বার ট্রাম্প সরকার’ কটাক্ষ। নেট নাগরিকেরাও মোদীর বার্তাকে তীব্র কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। অনেকে গুজরাত দাঙ্গা এবং রাজধানী দিল্লিতে গত বছরের গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনেও বিঁধেছেন মোদীকে।

Advertisement

টেক্সাসে গিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন করার প্রসঙ্গ টেনে বিরোধীদের বক্তব্য, ‘কার সঙ্গে ঘর করেছেন, বুঝে দেখুন!’ ভবিষ্যতে এমন ভুল না করার সতর্কবার্তাও শুনিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। ওই হামলাকারী উন্মত্ত জনতার মধ্যে একটি ভারতীয় পতাকাও উড়তে দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে মোদী এবং তাঁর দলের কথায় কথায় জাতীয়তাবাদ টেনে আনার প্রসঙ্গকে ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করে বিঁধতে ছাড়েননি কংগ্রেস এবং বামদলের নেতারা।

এ দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর টুইট ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় আমি অত্যন্ত আহত। নিয়মমাফিক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যেন চলতে থাকে। একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কখনই বেআইনি আন্দোলনের দ্বারা দমিয়ে দেওয়া যায় না।’ মোদীর এই টুইটের ঠিক পরেই সরব হন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘ফির একবার ট্রাম্প সরকারে’র ধ্বনি তুলেছিলেন। আশা করি ক্যাপিটল-এ এই ভয়ংকর, ন্যক্কারজনক, অভূতপূর্ব হিংসার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আর এই ভুল করবেন না। ভবিষ্যতে আচমকা কোনও হঠকারী মন্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া থেকেও বিরত থাকবেন। চিনের প্রেসিডেন্টের ব্যাপারেও তাঁর আরও সতর্কতা বজায় রাখা উচিত ছিল। তা হলে লাদাখ-কাণ্ড ঘটতে দেখা যেত না।’

Advertisement

কংগ্রেসের আর এক নেতা শশী তারুরের কথায়, ‘‘আমি মনে করি না, এই ঘটনার কোনও প্রভাব ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে পড়বে। কিন্তু এই ঘটনা চোখ খুলে দেওয়ার মতো। প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভাল কথা। তার মানে তিনি এবং তাঁর সরকার তাঁদের থেকে দূরত্ব তৈরি করছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন, ‘ইস বার ভি ট্রাম্প সরকার!’’

প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো অন্য রাষ্ট্রে গিয়ে সেখানকার নেতার হয়ে নির্বাচনী প্রচার করে এসেছেন!’’ বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, আমেরিকার প্রসঙ্গে বেআইনি আন্দোলনের কথা বলে প্রকৃতপক্ষে দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের প্রতি বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী। ডেরেকের কথায়, ‘‘মোদী এবং অমিত শাহ তো গোটা দেশেই বেআইনি ব্যবস্থা কায়েম করছেন! দেশের সংবিধান, সংসদীয় গণতন্ত্র— কোনও কিছুরই ধার ধারেন না তাঁরা।’’

সিপিএমের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণপন্থী ও চরমপন্থী ট্রাম্প সমর্থকদের মধ্যে ভারতীয় পতাকাও দেখা গিয়েছে, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এখন হাউডি মোদী-র সমর্থকেরা নীরব কেন? এটাই কি তাদের নমস্তে ট্রাম্পকে বাস্তবায়িত করার উপায়?’

ক্যাপিটল-এর সামনে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা বরুণ গাঁধীও। তাঁর প্রশ্ন, ‘ওখানে ভারতীয় পতাকা কেন? এটা এমন একটা লড়াই যেখানে আমরা কখনই অংশ নিতে পারি না।’ তাঁর টুইটের নীচেই শশী তারুর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লিখেছেন, ‘দুভার্গ্যজনক ভাবে ট্রাম্পপন্থীদের মতোই মানসিকতা রয়েছে বেশি কিছু ভারতীয়ের। দেশের পতাকাকে যারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, গর্বের প্রতীক হিসাবে নয়। তাদের সঙ্গে যারাই ভিন্ন মত হবে, তারাই দেশবিরোধী এবং বিশ্বাসঘাতক। ক্যাপিটল-এর সামনে ওই পতাকাটি আসলে আমাদের সবার জন্যই একটি সতর্কবার্তা।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement