প্রতীকী ছবি।
মায়ের কোলে অসুস্থ সন্তান। তাঁকে সাহায্য করতে অক্সিজেন সিলিন্ডার টেনে নিয়ে যাচ্ছেন অন্য এক জন। পটনা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের (পিএমসিএইচ) সামনের এই ছবি ঘিরে প্রশ্নের মুখে বিজেপির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ তত্ত্ব। দীর্ঘদিন ধরেই বিহারে ক্ষমতাসীন এনডিএ (বিজেপি ও জেডিইউ) জোট। তা সত্ত্বেও বিহারের সবচেয়ে বড় হাসপাতালে পরিষেবার এই বেহাল দশায় সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি নেটিজেনরাও।
এক দিকে পশ্চিমবঙ্গের ভোট-প্রচারে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বারেবারেই ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার অর্থাৎ কেন্দ্রে এবং রাজ্যে একই সরকারের পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন। তাঁদের যুক্তি, কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের পাশাপাশি রাজ্যেও যদি মসনদের দখল নেয় বিজেপিই, সে ক্ষেত্রে ভোলবদল হবে রাজ্যের। গড়ে উঠবে ‘সোনার বাংলা’। ভোটের প্রচারে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’ পশ্চিমবঙ্গে চালু করা হয়নি, এই অভিযোগ তুলেও মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু নেটিজেনদের প্রশ্ন, বিহারের মতো রাজ্য, যেখানে দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন বিজেপি-জোট সরকার, সেখানকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর এমন ভগ্ন দশা কেন? তা হলে কি ডাবল ইঞ্জিন তত্ত্ব পুরোটাই ফাঁপা বুলি? দীর্ঘদিন সময় পেয়েও তো সোনার বিহার তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তা হলে কোন জাদুমন্ত্রে সোনার ‘বঙ্গাল’ গড়বে বিজেপি?
টুইটারে এক জনের প্রশ্ন, নির্বাচনের সময়ে এ সব বিষয় কি সকলে ভুলে যান? আবার এক জনের কটাক্ষ, হিন্দু-মুসলমান, মন্দির-মসজিদের সামনে রোজকার জীবনের এ ধরনের সমস্যা তো তুচ্ছ! কেউ কেউ ‘আ্ত্মনির্ভর বিহার’ বলেও তাচ্ছিল্য করেছেন নীতীশ-মোদী সরকারকে।
যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে নিত্যদিন ধর্ষণ, খুন, যৌন নিগ্রহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সেই যোগীই বঙ্গের প্রচারে সরব হয়েছেন নারী সুরক্ষা নিয়ে। এ বার সামনে এল বিহারের স্বাস্থ্য পরিষেবার ভগ্ন দশা।
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সীমা নামে ওই মহিলা মুজফ্ফরপুরের বাসিন্দা। অসুস্থ সন্তানকে চিকিৎসার জন্য পিএমসিএইচ-এর সদ্যোজাত বিভাগে ভর্তি করেছিলেন তিনি। রবিবার শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তার আলট্রাসাউন্ডের বন্দোবস্তের কথা সীমাকে জানান চিকিৎসকেরা। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স। শেষ পর্যন্ত সীমাকে সাহা্য্যের জন্যে এগিয়ে আসেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। তিনিই অক্সিজেন সিলিন্ডার টেনে এগোতে থাকেন। প্রখর রোদের মধ্যে শিশু কোলে তাঁর পিছনে হাঁটতে দেখা যায় ওই অসহায় মহিলাকে।