রান্নার গ্যাস, পেট্রল-ডিজ়েল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চললেও তা নিয়ে আমজনতার মধ্যে তেমন ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিজেপি-বিরোধী দলগুলি নিজেদের মতো রাস্তায় নামলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়ার অভাব বিরোধী দলগুলিকে ভাবিয়ে তুলেছে। ‘মেহঙ্গাইমুক্ত ভারত’-এর ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামা কংগ্রেস নেতৃত্বও এ নিয়ে চিন্তিত।
আজ কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দাম বাড়িয়ে, সঞ্চয়ে সুদ কমিয়ে মোদী সরকার নতুন অর্থ বছরে সাধারণ মানুষের উপরে ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকার বোঝা চাপাচ্ছে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে মোদী সরকার তথা বিজেপি একেবারে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি মেনে চলে। হিন্দু ও মুসলমানদের উপরে একই ভাবে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপায়।’’ মুখে অভিযোগ তুললেও কংগ্রেস নেতারা মানছেন, পাঁচ রাজ্যের ভোটেও জিনিসপত্রের দাম নিয়ে মানুষের ক্ষোভের প্রতিফলন মেলেনি। ভবিষ্যতেও মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের উপরে যে বোঝা চাপছে, তা তুলে ধরা ছাড়া উপায় নেই। সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বিজেপি ভোটের সময় জিনিসের দামে ব্রেক লাগায়। তখন হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণ করে। তার পরে আবার জনতার পকেট কাটতে নেমে পড়ে। নির্বাচনে জয় বিজেপির হাতে দেশকে লুঠের লাইসেন্স তুলে দিয়েছে।’’ শনিবার থেকে পেট্রল-ডিজ়েলে লিটার প্রতি আরও ৮০ পয়সা দাম বেড়েছে। এই নিয়ে গত ১২ দিনে দশ দফায় মোট ৭ টাকা ২০ পয়সা দাম বাড়ল। কংগ্রেসের দাবি, দেশে যে পরিমাণে পেট্রল-ডিজ়েল বিক্রি হয়, তাতে লিটারে ৭.২০ টাকা দাম বৃদ্ধির অর্থ আমজনতার পকেট থেকে বছরে প্রায় ৭২,৫০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ। সারের দাম বাড়ার ফলে ৬২ কোটি কৃষকের উপরে ৭,৩০০ কোটি টাকার বোঝা চেপেছে। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম গত এক বছরে ১৪০ টাকা বেড়েছে। মানুষের ঘাড়ে ২৭ হাজার কোটি টাকার বাড়তি বোঝা চেপেছে। একই ভাবে সিএনজি, পিএনজি বা পাইপবাহিত গ্যাস থেকে শুরু করে ওষুধপত্রের দাম বৃদ্ধি, প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার কমে যাওয়া, গাড়ি, টিভি, রেফ্রিজারেটরের দাম বৃদ্ধির ফলেও মানুষের উপর বোঝা চেপেছে। কিন্তু তার আঁচ বিজেপির ভোটের বাক্সে লাগবে কি না, তা নিয়ে বিরোধী নেতারা নিশ্চিত হতে পারছেন না।