জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় আরএসএস-কে ‘প্রশ্নাতীত শংসাপত্র’ দিয়ে নির্দেশ জারি করেছিলেন, আরএসএসের সদস্য বলে কারও বিরুদ্ধে বলা অগণতান্ত্রিক। আজ বিরোধী শিবির একসঙ্গে প্রশ্ন তুলল, গোটা সরকারি ব্যবস্থা আরএসএস সম্পর্কে কেন এত স্পর্শকাতর হয়ে পড়ছে?
আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র, দলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‘আরএসএস-কে যে ভাবে সম্প্রতি শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে, তা দেখে সবথেকে বেশি আতঙ্কিত হতেন সর্দার বল্লভভাই পটেল। তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময়ে একাধিক নথি থেকে স্পষ্ট যে, তিনি আরএসএসের দেশবিরোধী, সংবিধান বিরোধী, হিংস্র চরিত্র নিয়ে আতঙ্কিত ছিলেন।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভায় দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘বিজেপি-সঙ্ঘের বর্তমান নেতৃত্ব আরএসএসের মতাদর্শের প্রতি দায়বদ্ধ। এই মতাদর্শ আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা এম এস গোলওয়ালকরের মেরুকরণের চিন্তাভাবনার উপরে চলে। গোলওয়ালকরের ‘বাঞ্চ অব থটস’ মুসলমান, খ্রিস্টানদের অভ্যন্তরীণ বিপদ বলে চিহ্নিত করেছিল। নরেন্দ্র মোদী গোলওয়ালকরকেও ছাপিয়ে যেতে চাইছেন।’’ কংগ্রেস ও তৃণমূল, দুই দলের নেতাদের মধ্যে আজ এ বিষয়ে আলোচনা হয়। তার পরে কংগ্রেসের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ আরএসএস সম্পর্কে তাঁদের মতামত জানিয়ে চেয়ারম্যান ধনখড়কে চিঠি লেখেন।
বুধবার রাজ্যসভার সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামজিলাল সুমন আরএসএসের লোকদের বিভিন্ন সংস্থার মাথায় বসানো হচ্ছে, এই অভিযোগ তোলার পরেই চেয়ারম্যান ধনখড় বলেছিলেন, আরএসএসের কোনও সদস্য দেশের উন্নয়নের যাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না বলাটা শুধু অসাংবিধানিক নয়, নিয়মবিরুদ্ধ। রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বলের মতে, ‘‘চেয়ারম্যানের পদে বসে ধনখড়ের এই মন্তব্য প্রথাবিরুদ্ধ। ধনখড়ের কথা রাজ্যসভার মত নির্দেশ করে। এই সব কথা কোনও সাংসদ বলতে পারেন, চেয়ারম্যান নন।’’
কিছু দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সরকারি কর্মচারীদের আরএসএসে যোগ দেওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। বুধবার মন্ত্রক সেই বিজ্ঞপ্তি সমস্ত সরকারি মন্ত্রকের পোর্টালের হোমপেজে তুলে ধরার নির্দেশিকা দেয়। জয়রামের যুক্তি, ‘‘১৯৪৮-এ আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছিল, হিংসা, বিদ্বেষের শিকড় উপড়ে ফেলতে এই নিষেধাজ্ঞা। কারণ, সঙ্ঘের মদতেপুষ্ট হিংসারই ফল হল গান্ধীজির হত্যা। সর্দার পটেল এই কথা গোলওয়ালকর, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কেও চিঠি লিখে জানান।’’