ছবি: পিটিআই।
বিজেপি বিহারে আসাদুদ্দিন ওয়াইসিকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের ভোটে ভাগ বসিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বার উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে নিয়েও বিজেপি-বিরোধী শিবিরে সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এসপি, বিএসপি এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, এমনিতেই চতুর্মুখী লড়াইয়ে বিরোধী ভোটব্যাঙ্কের বিভাজনের ফায়দা বিজেপি কুড়োবে। তার সঙ্গে আম আদমি পার্টি যোগ দিলে বিজেপির আরও সুবিধা হয়ে যেতে পারে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ঘোষণা করেছেন, ২০২২-এ আম আদমি পার্টি উত্তরপ্রদেশের ভোটে লড়বে। তার আগে নতুন বছরের গোড়াতেই বিধানসভা ভোটের সেমিফাইনাল— উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রায় ৫৯ হাজার পঞ্চায়েত প্রধানদের মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কেজরীবাল পঞ্চায়েত ভোটেও লড়বেন বলে ঘোষণা করেছেন। এসপি ও কংগ্রেস শিবিরের নেতারা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটের কথা ভেবেই দিল্লির আপ-সরকার দিল্লির সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কারণ পঞ্জাব-হরিয়ানার সঙ্গে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের চাষিরাও এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। কেজরীবাল একাধিক বার সিংঘু সীমানায় গিয়েছেন। তাঁর সরকার ও দলের বিধায়কেরা কৃষকদের জন্য জল সরবরাহ থেকে ওয়াই ফাই-এর বন্দোবস্ত করেছেন।
এসপি-র হয়ে অখিলেশ যাদবের দাবি, দ্রুত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা করা হোক। কৃষকদের অসন্তোষের কথা ভেবে যোগী আদিত্যনাথ সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছেন বলে এসপি নেতৃত্বের অভিযোগ। বিএসপি-ও প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে নেমে পড়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব রবিবার উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বৈঠকে বসবে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এখনও ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করছেন। তবে রাজ্যের নেতারা বছরের প্রথম দিন থেকেই গ্রামে গ্রামে ঘোরা শুরু করছেন। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির দু’জন করে নেতা গ্রামে গিয়ে থেকে মানুষের সমস্যা, মতামত শুনবেন।
আম আদমি পার্টি তাঁদের ভোট কাটতে নামছে— এখনই কোনও বিরোধী নেতৃত্ব সরাসরি এই অভিযোগ তুলে চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, এখনই এ কথা বললে ভোটের আগেই হার স্বীকার করে নেওয়া হবে। কিন্তু কেজরী হঠাৎ উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের কেন সিদ্ধান্ত নিলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘আসাদুদ্দিন ওয়াইসি-র এমআইএম বিধানসভা ভোটে লড়বে বলে বিজেপির পুরনো শরিক ওমপ্রকাশ রাজভড়ের ভারতীয় সমাজ পার্টি-সহ সাতটি দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। কিন্তু তাঁরাও এখনও লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়নি। অথচ আপ গ্রামে গ্রামে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য কী?’’ আপ নেতৃত্বের দাবি, দিল্লির পরে পঞ্জাব ও দেশের অন্যান্য রাজ্যেও আপ-এর সংগঠন তৈরি করাই এর লক্ষ্য।