দিল্লির গাজিপুর সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। ছবি সৌজন্য টুইটার।
দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি এবং শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ হরসিমরৎ কউর-সহ বিরোধী দলের একাধিক নেতা। সৌগত রায় আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, “আমরা গাজিপুর সীমানায় এসেছিলাম। পুলিশ আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেছে। আমাদের আটকে দেওয়া হয়েছে। এখন ফিরে যাচ্ছি। বিষয়টি সংসদে তুলব।”
বৃহস্পতিবার সকালে মোট ১৫ জন বিরোধী নেতা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান। গাজিপুরের সীমানা রীতিমতো ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। কৃষকদের রুখতে ৩১ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী এবং ১৬ কোম্পানি র্যাফ নিয়োগ করা হয়েছে। বিরোধী সাংসদরা গাজিপুর পৌঁছনোর আগেই মাটিতে পোঁতা পেরেক তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। সেই ভিডিয়ো মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
সীমানার বেশ কিছু আগেই আটকানো হয় সৌগতদের। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ দেখা করতে না দেওয়া ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন হরসিমরৎ-ও। বলেন, “কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি, যাতে সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায়। কিন্তু স্পিকার বিষয়টি উত্থাপন করতে দিচ্ছেন না আমাদের। তাই আমরা পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এসেছি। নিজে চোখে ওঁদের অবস্থা দেখলাম।”
পরে টুইটে লেখেন, ‘অন্নদাতাদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হচ্ছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কাঁটাতারের বেড়া, কংক্রিটের ঢালাই করা স্ল্যাব দিয়ে তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে। মাটিতে পোঁতা হয়েছে পেরেক। অ্যাম্বুল্যান্সস এবং দমকলের গাড়িও সেখানে নেই’।
এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের বক্তব্য, “কৃষকদের পাশে আমরা। তাঁরা যাতে সুবিচার পান, সরকারকে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আর্জি জানিয়েছি।”
কৃষক আন্দোলন নিয়ে ক্রমশ উত্তাপ বাড়ছে ঘরে-বাইরে। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল সংসদ। অচলাবস্থা কবে কাটবে তা নিয়ে কোনও দিশা নেই। অচলাবস্থা কাটাতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় দু’পক্ষই সহমত পোষণ করেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের নেতারা গাজিপুর সীমানায় কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে পৌঁছেছেন। কৃষকদের সঙ্গে বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের আদৌ কথা বলতে অনুমতি দেওয়া হয় কি না, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।
অন্য দিকে, কৃষকরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি এবং ‘চাক্কা জ্যাম’-এর হুঁশিয়ারি দেওয়ায় গাজিপুর, টিকরি এবং সিঙ্ঘু সীমানায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারির ঘটনার পর থেকেই দিল্লি সীমানার নিরাপত্তা বাড়ানো করা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া, অস্থায়ী দেওয়াল তুলে তিন-চার স্তরের নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছে।