Amit Shah

Amit Shah: দেশকে এক সুতোয় বাঁধার ক্ষমতা রয়েছে হিন্দি ভাষার, ফের এক দেশ এক ভাষার প্রশ্নে সরব শাহ

বৈঠকে শাহ বলেন, দেশে সকলের জন্য এমন একটি ভাষার প্রয়োজন রয়েছে যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব পরিচয়কে তুলে ধরতে সক্ষম হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

ফের এক দেশ এক ভাষার প্রশ্নে সরব হলেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, ইংরেজির পরিবর্তে সরকারি ভাষা হিসাবে হিন্দিকেই আরও ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করার কথা ভাবছে সরকার। সেই কারণে তাঁর পরামর্শ, দেশের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষেরা যখন পরস্পরের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন ইংরেজির বদলে উচিত হিন্দিতে কথা বলা। শাহের ‘হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার’ ওই মন্তব্যের সমালোচনা করে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের মতে, এ ভাবে একটি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার আদৌ দেশকে ঐক্যবদ্ধ করবে না। উল্টে তা দেশকে ভেঙে দিতে পারে। কংগ্রেসের অভিযোগ, আসলে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নজর ঘোরাতেই ভাষা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করছে শাসক শিবির।

Advertisement

গত কাল সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭ তম বৈঠক ছিল। বিতর্কের সূত্রপাত ওই বৈঠকেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রের খবর ওই বৈঠকেই এক দেশ, এক ভাষার পক্ষে সওয়াল করে সরকারি ভাষা হিসাবে হিন্দিকে সরকারি কাজে আরও ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করার প্রশ্নে সওয়াল করেন অমিত শাহ। সূত্রের মতে— বৈঠকে শাহ বলেন, দেশে সকলের জন্য এমন একটি ভাষার প্রয়োজন রয়েছে যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব পরিচয়কে তুলে ধরতে সক্ষম হবে। একমাত্র হিন্দি ভাষার ক্ষমতা রয়েছে দেশকে এক সুতোয় বেঁধে রাখার। বৈঠকে শাহ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারি কাজে সরকারি ভাষা ব্যবহারে জোর দিয়েছেন। ওই সিদ্ধান্ত সরকারি ভাষা হিসাবে হিন্দির গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দেবে। স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, বিভিন্ন রাজ্যের নাগরিকেরা যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলবেন, তখন তাঁদের উচিত ইংরেজির পরিবর্তে হিন্দিতে কথা বলা— এমন মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে শাহ নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হিন্দি ভাষাশিক্ষার উপরেও জোর দেন।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দেশের ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের মাতৃভাষা হিন্দি নয়। তা ছাড়া ভারতের মতো বৈচিত্রময় দেশকে একটি ভাষার বাঁধনে বাঁধা সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের মতে, এ হল সঙ্ঘ পরিবারের হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্তান নীতির অংশ, অতীতে যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে জাতীয় শিক্ষা নীতিতেও। যেখানে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। যে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছিল দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি। এ যাত্রায় শাহের মন্তব্য প্রসঙ্গে ডিএমকে সাংসদ কানিমোজি বলেন, “এতে হিতে বিপরীত হবে। হিন্দির মাধ্যমে ঐক্য বাড়াতে গিয়ে অনৈক্যই তৈরি হবে। বিভাজন তৈরি হবে দেশের এক প্রান্তের সঙ্গে আর এক প্রান্তের।” পিএমকে দলের নেতা এস রামডসের মতে, ভারতের সরকারি ভাষাগুলির মধ্যে সেতু হিসাবে কাজ করুক ইংরেজি।

Advertisement

অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কটাক্ষ, “ইংরেজিতে না হোক, অমিত শাহ অন্তত হিন্দিতেই বলুন দেশে কেন এত বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে? আসলে এ সব হল দেশের প্রকৃত সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য বিজেপির প্রচেষ্টা। অতীতে ভাষা নিয়ে অনেক রক্ত ঝরেছে। তাই এ নিয়ে ফের দ্বন্দ্ব হোক তা মোটেই কাম্য নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement