ফাইল চিত্র।
এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি বাঁচাতে স্কুলপড়ুয়াদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠল। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী, তথা ‘মোদী স্যর’কে ধন্যবাদ জানিয়ে পড়ুয়াদের একাধিক ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে সামনে আসার পরেই এই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সব ক’টি ভিডিয়োতেই #থ্যাঙ্কইউমোদীস্যর হ্যাশট্যাগে এক সুরে পড়ুয়ারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথনের ছবি বলে দাবি করে বিরোধীরা শুক্রবার একাধিক স্ক্রিনশট টুইটারে পোস্ট করেন। তাতে থাকা কথাবার্তা উল্লেখ করে তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশে একাধিক স্কুল তাদের পড়ুয়াদের দিয়ে এমন ভিডিয়ো রেকর্ড করিয়েছে। বৃহস্পতিবারই শিক্ষামন্ত্রকের আয়োজিত পড়ুয়া ও অভিভাবকদের ভার্চুয়াল বৈঠকে ঢুকে তাঁদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। ওই দিনই বহু কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুলের তরফে বাছাই করা ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে ভিডিয়ো বার্তা টুইট করা হয়। সব ক’টির বয়ানই প্রায় এক। সকলেই বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করে তাদের চিন্তামুক্ত করার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল নিজেও এমন একাধিক ভিডিয়ো টুইট করেন। এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের জাতীয় রো-অর্ডিনেটর গৌরব পাঁধী বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী যখন বলেছিলেন নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখাই মোদীর একমাত্র লক্ষ্য এবং তার খেসারত দেশের মানুষকে দিতে হচ্ছে, তখন অনেকেই বিশ্বাস করেননি। স্কুলপড়ুয়াদের দিয়ে জোর করে তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর ভিডিয়ো তৈরি করিয়ে মোদী রাহুলকেই ঠিক প্রমাণিত করলেন।’’
সমাজমাধ্যমের পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, গত বছর অগস্টে এমন করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মোদী তাঁর ‘মন কি বাত’-এ জয়েন্ট এন্ট্রান্স ও নিট পরীক্ষা নিয়ে কিছু না বলায় ‘ডিসলাইক’ অর্থাৎ অপছন্দের ঝড় আছড়ে পড়েছিলে তাঁর একাধিক ভিডিয়োতে। এ বার তাই হয়তো এমন বার্তা দিয়ে যুবসমাজের উদ্বেগ প্রশমনের চেষ্টা করা হয়েছে। আবার অনেকের মতে, প্রথম ভোটাররা বরাবরই মোদী তথা বিজেপির লক্ষ্য। তাই ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বা অন্য সময়ও মোদীকে পড়ুয়াদের সঙ্গে মত বিনিময় করতে দেখা গিয়েছে। এখনকার দ্বাদশের পড়ুয়ারা অনেকেই ২০২৪ সালে প্রথম ভোট দেবে। তাই এর পিছনে সূক্ষ রাজনৈতিক কৌশলও দেখছেন অনেকে।