শ্রীনগরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে বাসিন্দারা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কী ভাবে উপকৃত হবেন, তা বোঝাতে আয়োজন হয়েছিল সভার। কিন্তু আজ শ্রীনগরের এক সরকারি দফতর চত্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির সেই সভায় হাজির হলেন না ৪০০ জনের বেশি মানুষ।
জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধে বোঝাতে ৩৬ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দফায় দফায় সেখানে পাঠাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই প্রচারেরই অঙ্গ হিসেবে এ দিন সভা করেন নকভি। সভায় একটি উর্দু শায়েরি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘যে সব নক্ষত্র দেখা যাচ্ছে তার বাইরেও মহাবিশ্ব আছে।’’ সব কাশ্মীরি পড়ুয়াকে বৃত্তি দেওয়া এবং হজযাত্রায় আরও কাশ্মীরিকে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। পরে নকভি দাবি করেন, প্রাক্তন শাসকদের দুর্নীতির ফলে জম্মু-কাশ্মীরের বিপুল ক্ষতি হয়েছে।
মোদী সরকার ফের কাশ্মীরকে ‘ভূস্বর্গ’ করে তুলবে।
তবে সভায় চেয়ার, তাঁবু, খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির দাবি, ৫০০ চেয়ারের বেশিরভাগই ছিল খালি। সভায় মূলত হাজির হয়েছিলেন যাযাবর পশুপালক গুজ্জর ও বকরওয়াল সম্প্রদায়ের সদস্যেরা। জম্মু-কাশ্মীরের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ ওই সম্প্রদায়ের মানুষ।
জঙ্গি উপদ্রুত ত্রাল থেকে সভায় এসেছিলেন গুজ্জর ও বকরওয়ালদের যুব প্রতিনিধি দলের নেতা চৌধুরি আলতাফ। বললেন, ‘‘আমি গোটা উপত্যকা থেকে লোক নিয়ে এসেছি। এই সফর নিয়ে আমরা উৎসাহিত। মন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের জমি ও রোজগার বিপন্ন হওয়া চলবে না। বহিরাগতেরা তাতে ভাগ বসালে আন্দোলন হবে।’’ ফকির গুজরি গ্রামের সরপঞ্চ রাজ মহম্মদ আদতে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সদস্য। বললেন, ‘‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যাঁরাই আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চান তাঁদের সঙ্গেই কথা বলতে হচ্ছে। দেখা যাক, এঁরা কী বলতে চান। আগে আমরা অনেকের কথা শুনেছি।’’ নকভিকে দেওয়া স্মারকলিপিতে কাশ্মীরিদের জন্য ‘ডোমিসাইল’ শংসাপত্র চালুর দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপ চালু হলে বহিরাগতেরা জম্মু-কাশ্মীরে চাকরির আবেদন বা জমি কিনতে পারবেন না।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রচারে কাশ্মীরের চেয়ে জম্মুকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অনেক বেশি। ৩৬ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র ৫ জন আসবেন উপত্যকায়। মোট ৫৯টি সভা-অনুষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৮টি হবে কাশ্মীরে। উপত্যকার ১০টি জেলার মধ্যে মাত্র ৩টিতে যাবেন মন্ত্রীরা। তবে বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে জম্মুতেও পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই বিজেপি। সেখানকার বাসিন্দারাও তাঁদের রোজগার-জমিতে বহিরাগতদের হাত পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন।