এখানেই খুন হন ফুচকা বিক্রেতা। ছবি: পিটিআই
রুটি-রুজির জন্য ভিন্ রাজ্য থেকে আসা আরও দু’জনকে কাশ্মীরে খুন করল জঙ্গিরা। এক জন ফুচকাওয়ালা। দ্বিতীয় জনও দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক। দু’সপ্তাহে এই নিয়ে ৯ জন জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারালেন উপত্যকায়।
আইজিপি (কাশ্মীর) বিজয় কুমার জানাচ্ছেন, বিহারের বাঁকা জেলার অরবিন্দ কুমার শাহ শ্রীনগরের পথে ফুচকা বেচতেন। শনিবার ইদগাহ এলাকার কাছে তাঁকে গুলি করে মেরেছে জঙ্গিরা। আইএস দাবি করেছে, এ কাজ তাদের। এ দিকে কাশ্মীর জ়োন পুলিশ টুইট করে জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের শাহরানপুর থেকে আসা শ্রমিক সাগির আহমেদ পুলওয়ামায় জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন। এ দিন তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আইজিপি (কাশ্মীর) বিজয় জানিয়েছেন, পরপর সাধারণ নাগরিকদের হত্যার ঘটনায় পাল্টা অভিযান চলছে। ৯টি সংঘর্ষে ১৩ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। শুধু শ্রীনগরেই গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।
অরবিন্দ কুমারের মৃত্যুর খবর পেয়েই এ দিন কড়া ভাষায় টুইট করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। লেখেন, “ফেরিওয়ালা অরবিন্দ কুমারের হত্যার তীব্র নিন্দা করছি। আরও এক জন সাধারণ মানুষকে নিশানা করা হল। তিনি তো শুধু রোজগারের আশায় শ্রীনগরে এসেছিলেন।...” পিপলস কনফারেন্সের প্রাক্তন নেতা সাজাদ লোন টুইটে লিখেছেন, “এ তো পুরোপুরি সন্ত্রাসবাদ। আবার এক ভিন্ রাজ্যের ফেরিওয়ালাকে গুলি করে হত্যা করা হল ইদগায়। কী লজ্জা। কতটা কাপুরুষ হতে পারে।”
গত ২ অক্টোবর করন নগরে শ্রীনগরের ছাত্তাবলের বাসিন্দা মজিদ আহমেদ গোজরিকে এবং এসডি কলোনি বাটামালুতে স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ শফি ডরকে জঙ্গিরা গুলি করে মেরেছিল। পাশাপাশি চলছে রাজ্যের সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ। গত ৫ অক্টোবর শ্রীনগর ও বান্দিপোরায় খুন হন তিন জন সংখ্যালঘু। শ্রীনগরের সুপরিচিত এক ওষুধের দোকানের মালিক মাখনলাল বিন্দ্রু তাঁদের অন্যতম। এর পর ৭ অক্টোবর ইদগাহ এলাকাতেই খুন হন এক শিক্ষক ও এক শিক্ষিকা। এ দু’জনও সংখ্যালঘু। ৭০-এর দশকে উপত্যকা ছেড়েছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিতেরা। এখন জঙ্গি নিশানায় থাকা সংখ্যালঘুদের অনেকে চাকরিবাকরি-ব্যবসা ছেড়ে সেখান থেকে পালাতে শুরু করেছেন আতঙ্কে। ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে কাশ্মীর শান্ত হয়ে গিয়েছে বলে সরকার দাবি করলেও সন্ত্রাস চলছেই সমানে। জঙ্গি নিশানায় এখন ভিন্ রাজ্যের মানুষ।