প্রতীকী ছবি।
টানা এক সপ্তাহ ধরে আন্তর্দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিমানে বোমার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাদ গেল না শনিবারও। এ দিনও একটি বিমানে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। জয়পুর থেকে দুবাইগামী এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। জানা গিয়েছে, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কথা ছিল বিমানটির। কিন্তু বোমাতঙ্কের জেরে এক ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ছাড়ে সেটি।
অন্য দিকে, শুক্রবারই বিস্তারার একটি বিমানে হুমকিবার্তা আসার পরই হুলস্থুল পড়ে যায়। সেটি দিল্লি থেকে লন্ডন যাচ্ছিল। মাঝপথেই হুমকিবার্তা আসে। আর সেটি পাওয়ার পরই বিমানটিকে জরুরি ভিত্তিতে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। যদিও দু’টি ক্ষেত্রেই সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি বলে সূত্রের খবর। আবার বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বইগামী আকাসা এয়ারের একটি বিমানেও বোমাতঙ্ক ছড়ায়। বিমানটি ওড়ার আগের মুহূর্তে হুমকিবার্তা আসতেই যাত্রীদের নামিয়ে বিমানে তল্লাশি চালানো হয়। এ ক্ষেত্রেও সন্দেহজনক তেমন কিছু মেলেনি বলেই বিমানবন্দর সূত্রে খবর। তবে বিমান ছাড়তে বেশ কিছু ক্ষণ দেরি হয়।
গত রবিবার থেকে লাগাতার হুমকিবার্তা আসছে বিভিন্ন সংস্থার বিমানগুলিতে। তার জেরে কোনওটি বাতিল করতে হয়েছে। কোনও বিমানকে জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় ছত্তীসগঢ় থেকে এক কিশোরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে মুম্বই পুলিশ। দিল্লি পুলিশও পর পর বিমানে বোমাতঙ্কের ঘটনার তদন্ত করছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিও ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে। বার বার বোমাতঙ্ক আর হুমকি ফোনের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকেরও। যাত্রীদের মধ্যেও তার প্রভাব পড়ছে। হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। লাগাতার এই হুমকি ফোন এবং বোমাতঙ্কের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলিও।
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্ট কারা ব্যবহার করছেন, তার খোঁজ চলছে। তবে তদন্তকারীদের একটি সূত্রের খবর, যাঁরা বোমাতঙ্ক ছড়াচ্ছেন, তাঁদের যাতে চিহ্নিত করতে না পারা যায়, তার জন্য ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বার্তাপ্রেরকদের দ্রুত চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। সে কারণেই ভিপিএন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সাহায্য চেয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
বিমানে বোমাতঙ্কের ঘটনায় একটি সন্দেহভাজন এক্স হ্যান্ডলকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ‘স্কিজ়োবম্বার৭৭৭’ নামে ওই অ্যাকাউন্টটি এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই বানানো হয়েছিল। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে সাতটি হুমকিবার্তা পাঠানো হয়। তার পরই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাদের যাতে কোনও ভাবে চিহ্নিত করতে না পারা যায়, তার জন্য অবস্থান গোপন করতে ভিপিএন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। যে এক্স হ্যান্ডলগুলি থেকে এই হুমকিবার্তা পাঠানো হচ্ছে সেগুলি চিহ্নিত করতে ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (১৪সি), ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট-ইন) একযোগে কাজ করছে।