উত্তরাখণ্ডে দাবানল। — ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডের দাবানলের গ্রাসে প্রাণ হারালেন এক প্রৌঢ়া। শনিবার আলমোড়া জেলায় তাঁর খামারবাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। গবাদি পশুদের বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে গিয়ে দগ্ধ হন বছর ৬৫-র পূজা নামের ওই নেপালি শ্রমিক। হৃষিকেশের এমসে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। রবিবার সেখানেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ার। এই নিয়ে গত তিন দিনে দাবানলের কবলে পড়ে প্রাণ হারালেন পাঁচ জন।
উত্তরাখণ্ডের কয়েকটি জঙ্গলে আচমকাই আগুন লেগে যায়। সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। জঙ্গল ছাড়িয়ে আগুন পৌঁছে যায় লোকালয়েও। কারও বাড়ি, কারও কারখানা এই আগুনের গ্রাসে পুড়ে ছাই হয়েছে। অনেকের শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিয়েছে দাবানল। এই দাবানলের কবলে পড়ে গত সপ্তাহেই প্রাণ হারিয়েছিলেন পূজার স্বামী।
আলমোড়া জেলার পৌরি তহসিলে পূজার খামার বাড়িতেই শনিবার আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। আগুন এ ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কোনও কিছু না ভেবে নিজেই আগুন নেভাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাঁর শরীরের অনেকাংশ পুড়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। এর আগে, এই জেলারই একটি পাইন রজন কারখানার কাছে আগুন পোঁছে গিয়েছিল। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তিন জন শ্রমিকের।
আলমোড়া জেলার বিখ্যাত মন্দির দুনাগিরি। শনিবার সেই মন্দির চত্বরেও আগুন ছড়িয়েছিল। অনেক তীর্থযাত্রীর সমাগম হয় ওই মন্দিরে। সারা বছরই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন তাঁরা। আগুন লাগার কারণে তীর্থযাত্রীদের পথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। অল্পের জন্য বড়সড় বিপদ থেকে রক্ষা পান তীর্থযাত্রীরা।
কবে এই আগুন নিভবে? দেহরাদুন আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১১ মে থেকে বৃষ্টির তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আবহাওয়াবিদদের কথায়, এই বৃষ্টিই জঙ্গলের আগুন নেভাতে সাহায্যে করবে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। কী ভাবে এই দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছেন তিনি।
উত্তরাখণ্ড বন দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৯১০টি জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগই মনুষ্যসৃষ্ট। এর ফলে বন দফতরের ১১৪৫ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে।