মণিপুরে নতুন করে অশান্তির ঘটনায় মৃত্যু একজনের। — ফাইল ছবি।
মণিপুরে অশান্তি থামার নাম নেই। নতুন করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। আহত হয়েছেন আরও এক ব্যক্তি। এই ঘটনার জেরে নতুন করে কার্ফু জারি হয়েছে। টহল দিচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।
নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুরের বিষ্ণুপুর। চূড়াচাঁদপুরের সঙ্গে বিষ্ণুপুরের সীমানা এলাকায় বুধবার জঙ্গিদের সঙ্গে একদল মানুষের সংঘর্ষ বেধে যায়। তাতেই এক জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এমনই জানিয়েছে পুলিশ।
মণিপুরের হিংসার ঘটনায় ঘরছাড়া বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের মৌরাং এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সংঘর্ষে ৩০ বছরের তৈজাম চন্দ্রমণি নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন ২২ বছরের লেইচোমবাম আবুঙ্গাও। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা বিষ্ণুপুর জেলার একটি গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার পর থেকেই এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘরপোড়া মানুষ আশ্রয় নেন মৈরাংয়ের শিবিরে। বুধবার শিবিরে খবর আসে, জঙ্গিরা গ্রামের একটি স্কুলে আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করছে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের দিকে ছুটে যান শিবিরের আশ্রয়প্রার্থীরা। পথেই সন্দেহভাজনদের সঙ্গে মুখোমুখি পড়ে যান ঘরছাড়া গ্রামবাসীরা। শুরু হয় সংঘর্ষ। তাতে আহত হন তৈজাম এবং লেইচোমবাম। পরে তৈজামের মৃত্যু হয়।
বুধবার মণিপুরের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী তথা রাজ্যের অন্যতম বিজেপি নেতা কোনথৌজাম গোভিনদাসের বিষ্ণুপুরের বাড়িতে হামলা চালান স্থানীয়দের একাংশ। তাদের অভিযোগ, হিংসা চলাকালীন প্রশাসনের যে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার কথা ছিল, তা নেওয়া হয়নি। যদিও সেই সময় বাড়িতে বিজেপি নেতা বা তাঁর কোনও পরিজন ছিলেন না। হামলার ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন এলাকার মহিলারা। মণিপুরে কুকি বনাম মেইতেই সংঘর্ষের ঘটনায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটল।
মেইতেই সম্প্রদায়ের তফসিলি উপজাতি তকমার দাবির বিরোধিতা করে গত ৩ মে মণিপুরে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ নামে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। গোলমালের শুরু সেখানেই। তার পর থেকেই তা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সেই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ হাজার সেনাকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্বের ছোট রাজ্যে। কিন্তু কিছুতেই হিংসাত্মক ঘটনায় লাগাম পরানো যাচ্ছে না।