দিল্লির রাস্তায় আবার অঞ্জলিকাণ্ডের ছায়া। প্রতীকী ছবি।
দিল্লির রাস্তায় আবার অঞ্জলিকাণ্ডের ছায়া। বিয়েবাড়ি থেকে মদ্যপান করে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুটারআরোহীকে ধাক্কা মারলেন পাঁচ কলেজছাত্র। দুর্ঘটনার জেরে ওই স্কুটারচালক গাড়ির বনেটে আটকে গেলে সে অবস্থায় গাড়ি ছোটালেন তাঁরা। শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীতে এমনই অভিযোগ উঠেছে ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই স্কুটারচালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য জন গুরুতর জখম। অভিযুক্ত ৫ জনকেই গ্রেফতার করেছে দিল্লির কেশবপুরম থানার পুলিশ।
‘ইন্ডিয়া টুডে’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ৩টে নাগাদ দিল্লির রাস্তায় দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ১৯ থেকে ২১ বছরের ওই ৫ ছাত্র। অভিযোগ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁরা। কানহাইয়া নগর এলাকার প্রেরণা চক দিয়ে যাওয়ার সময় একটি হন্ডা অ্যাক্টিভা স্কুটারকে সজোরে ধাক্কা মারে তাঁদের টাটা জেস্ট গাড়িটি। দুর্ঘটনার জেরে গাড়িটির বনেট খুলে যায়। বনেট এবং গাড়ির সামনের কাচের মাঝে আটকে পড়েন স্কুটারচালক কৈলাস ভাটনগর। স্কুটার কৈলাসের পিছনে বসা সুমিত খেরি লাফিয়ে গিয়ে পড়েন গাড়িটির মাথায়। এর পর সেখান থেকে গড়িয়ে রাস্তায় পড়েন তিনি। এর পর কৈলাসকে ওই অবস্থায় নিয়েই গাড়ি ছুটিয়ে দেন ছাত্ররা। প্রায় ৩৫০ মিটার ও ভাবে গাড়ি চালিয়ে যান তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই অবস্থায় টাটা জেস্ট গাড়িটিকে দেখে সেটির পিছুধাওয়ার করেন কেশবপুরম থানার ২টি টহলদারি ভ্যানে থাকা পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় কৈলাসকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সুমিতের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের দাবি, গাড়ি থেকে পালানোর সময় প্রবীণ ওরফে সিল্লি এবং দিব্যাংশ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পালিয়ে গেলেও তাঁদের পরে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এই ঘটনায় দিল্লির সুলতানপুরী এলাকায় বর্ষবরণের রাতে দুর্ঘটনায় মৃত ২০ বছরের অঞ্জলি সিংহের ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে। ওই রাতে অঞ্জলির স্কুটারে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে তাঁকে গাড়ির নীচে টেনেহিঁচড়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে ৪ জনের বিরুদ্ধে। দুর্ঘটনায় তাঁর স্কুটার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন অঞ্জলির বন্ধু নিধিও। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ওই অবস্থায় গাড়ি ছোটানোর পর ভোর ৪টে নাগাদ কঞ্ঝাবলা এলাকায় অঞ্জলির দলাপাকানো দেহ দেখতে পান স্থানীয়েরা।