আলাপুঝাতে ত্রাণশিবিরে ওনাম উৎসব। ছবি: সংগৃহীত।
ওনাম। সারা বছর এই সময়টির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন কেরলের মালয়ালি সমাজ। হিন্দুদের উৎসব হলেও ‘ওনাম’ আসলে কৃষি উৎসব। তাই এই উৎসবে মাতেন সমাজের সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাই।
অন্যান্য বছরের মতো এ বারও ধীরে ধীরে উৎসবে মাতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কেরলবাসী। কিন্তু ভয়াবহ বন্যা পাল্টে দিয়েছে ছবিটা। হঠাৎ করেই চেনা আশপাশটা বদলে গিয়েছে ধ্বংসস্তূপে। এই মুহূর্তে নিজের বাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আছেন অন্তত দশ লক্ষ মানুষ। ত্রাণ এলে তবেই মিলছে দিনের খাওয়াটুকু। তবু উৎসবের মেজাজ পিছু ছাড়ে না। কারণ এই উৎসব বীজ বপন করার। নতুন বছরকে আরও সুরক্ষিত করার উৎসব।
অগত্যা যার যেটুকু সম্বল, তাই দিয়েই কোনও রকমে চলছে উৎসব পালন। আত্মীয়-পরিজন পাশে না থাকুক, ত্রাণশিবিরের নতুন পরিচিত মানুষদের সঙ্গেই ‘ওনাম’ চলছে কেরলে। অনাড়ম্বর কেরলের মন্দিরও। অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমক, রঙিন ফুলের নকশা এই বছর নেই। বিখ্যাত নৌকা প্রতিযোগিতাও নেই। কিন্তু আড়ম্বর কম হলেও মেজাজটা খাঁটি। কারণ এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই ঘুরে দাঁড়ানোর ‘স্পিরিট’টা খুঁজে পাচ্ছেন কেরলবাসী। বিদেশে থাকা মালয়ালি সম্প্রদায়ের মানুষজনও সেই আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে আড়ম্বর কমিয়ে কোনও রকমে সারছেন উৎসব।
তিরুঅনন্তপুরমে অনাড়ম্বর বিকিকিনি। ছবি: পিটিআই।
ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, তার হিসেব এখনও শেষ হয়নি। সরকারি হিসেবে বলা হচ্ছে আনুমানিক কুড়ি হাজার কোটি টাকা। ওনাম উৎসবের জন্য আগেভাগেই বরাদ্দ তিরিশ কোটি টাকা ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে কেরল সরকার। আড়ম্বরহীন উৎসব পালনের মধ্যেই চলছে বন্যাবিধ্বস্ত কেরল পুনর্গঠনের কাজ। বাড়ি বানাতে সুদছাড়া গৃহঋণ দেওয়ার কথা ভাবছে কেরল সরকার। শুক্রবারই এ কথা জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী।
তারই মধ্যে কেরলবাসীকে ওনামের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন সারা পৃথিবীর মানুষ। ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক সর্বত্রই। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)