নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদব - ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবারই কেরলে কোচির জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলি একজোট হচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্তদের রক্ষা করতেই নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ দেখা যাচ্ছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। শুক্রবার প্রধামন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন এনডিএ-ত্যাগী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর বক্তব্য, কেউই দুর্নীতিগ্রস্তদের রক্ষা করতে চায় না। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন একের পর এক বিরোধী শাসিত রাজ্যে দল ভাঙিয়ে সরকার ফেলে দেওয়া হলেও, কেন এর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যায় না প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর দলের কাউকে?
মোদী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমি ১৫ অগস্ট লালকেল্লা থেকে বলেছিলাম দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় এসে গিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখলাম দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করতেই জাতীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়ে গেল।’’
সাংবাদিকরা এই ‘নয়া মেরুকরণ’ নিয়ে নীতীশ কুমারকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘যখন অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি সকলের খেয়াল রাখতেন। আমিও বিহারে দীর্ঘ দিন কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা লোক যা খুশি বলতে পারেন, কিন্তু আমি এ সবের পরোয়া করি না।’’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা এসেছে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের তরফেও। শুক্রবার তিনি জানান, বিজেপির এক হাজারেরও বেশি বিধায়কের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপিতে যোগ দিলেই কেউ সৎ হয়ে যায় কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন লালু-পুত্র।
প্রসঙ্গত, বিরোধী দলগুলির তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে, সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থে’ ব্যবহার করছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। বিরোধী শাসিত রাজ্য সরকারগুলিকে ভাঙার জন্যই এমন কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে সরব হয়েছে, ঝাড়খণ্ডের জেএমএম থেকে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী দলগুলি এর বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছে। দু’দিন আগেই বিহারে এসেছিলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। বিহারে নীতীশের সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখতে পাওয়াকে বিরোধী জোট গঠনের প্রয়াস বলেই মনে করছেন অনেকে। সম্প্রতি বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহও বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের সব রাজনৈতিক দলকে একত্রিত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। নাগরিক সমাজকেও বিজেপির ‘অন্যায় নীতি’র বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন তিনি।