Election

Omicron scare: ভোট পিছোবে যোগীর রাজ্যে?

করোনা পরিস্থিতি নিয়েও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে ২৭ ডিসেম্বর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে কমিশনের কর্তাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:০৭
Share:

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র ফাইল ছবি

দেশে দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনকে উত্তরপ্রদেশের ভোট কয়েক মাস পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। আদালতের সেই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ভোট পিছিয়ে যাবে কি না, সেই প্রসঙ্গে আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানান, আগামী সপ্তাহে তিনি উত্তরপ্রদেশ যাচ্ছেন। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। ওই সফরের আগে উত্তরপ্রদেশ ও ভোটমুখী বাকি চার রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়েও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে ২৭ ডিসেম্বর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে কমিশনের কর্তাদের। সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট পিছোবে কি না, ৩০ ডিসেম্বর তা সাংবাদিক বৈঠক করে জানাতে পারেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।

Advertisement

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে অনেক দফায় ভোট করিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল কমিশন। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শেষ কয়েক দফার প্রচারে রাশও টানতে হয়েছিল। ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি মধ্যেই নতুন বছরের শুরুতে পাঁচ রাজ্যে ভোট করালে নতুন করে এক প্রস্ত মুখ পুড়তে পারে কমিশনের। দেশে বর্তমানে ৩৫৮ জন ওমিক্রন আক্রান্তের মধ্যে দু’জন উত্তরপ্রদেশের। কিন্তু ঝুঁকি না নিয়ে, উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে আগামী কয়েক দিন রাজ্যে রাত ১১টা থেকে নৈশ কার্ফু ঘোষণা করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। কিন্তু ভোট হলে, দিনে বেলাগাম মিটিং-মিছিল ও রাতে কার্ফু করে যে ওমিক্রনকে রোখা সম্ভব নয়, ঘরোয়া ভাবে সেটা মেনে নিচ্ছেন সব পক্ষই।

ওমিক্রন যে ভাবে বিশ্বে সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউকে ডেকে এনেছে, ভারতেও কোভিড বিধি না মানলে তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া কার্যত অবশ্যম্ভাবী বলে আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। আগামী চার থেকে ছ’সপ্তাহে ওমিক্রন সংক্রমণ এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছতে পারে যে, দেশে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। নতুন বছরের শুরুতে পাঁচ রাজ্যে ভোট করাতে হলে গোটা প্রক্রিয়ার জন্য ন্যূনতম দেড় মাসের বেশি সময় লাগবে। তার মধ্যে লাগামছাড়া ভোট-প্রচার শুরু হলে ওই পাঁচ রাজ্যে সংক্রমণের পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।

Advertisement

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘নতুন বছরের শুরুতে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ওমিক্রন যে ভাবে ছড়াচ্ছে, সরকারের কাছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।’’

সূত্রের মতে, এ যাত্রায় মেপেই পা ফেলতে চাইছে কমিশন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে দিল্লিতে ২৭ ডিসেম্বর ও উত্তরপ্রদেশে গিয়ে ২৮-৩০ ডিসেম্বর রাজ্যের স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র ও নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী কমিশন।

বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে দলের যা হাল, তাতে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হলে তিনি অবাক হবেন না। এ নিয়ে টুইটারে তিনি লিখেছেন, ভোট পিছিয়ে গেলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে ওই রাজ্যে। স্বামীর মতো বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের মতে, নানা কারণে উত্তরপ্রদেশের মানুষ ক্ষেপে রয়েছে মোদী-যোগী সরকারের উপরে। তার উপরে ওমিক্রন সংক্রমণের মধ্যে ভোট হলে ভরাডুবির পূর্ণ আশঙ্কা রয়েছে। তাই জনতার ক্ষোভকে থিতিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েক মাস সময় দেওয়ার পক্ষপাতী দলের একটি অংশ। যদিও অন্য অংশের দাবি, উত্তরপ্রদেশে যথেষ্ট ভাল অবস্থায় রয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিততে চলেছে বিজেপি। ফলে দল নীতিগত ভাবে ভোট পিছোনোর পক্ষপাতী নয়। কমিশন কোনও সিদ্ধান্ত নিলে অন্য কথা।’’

ওমিক্রন বিপদের কথা মাথায় রেখে গত কাল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট ভোট প্রচার, জনসভা এড়ানোর সুপারিশ করেছে। যদিও ইতিমধ্যেই কোভিড বিধির তোয়াক্কা না করেই রাজ্যে-রাজ্যে ভোট প্রচার শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্য, ‘‘কী ভাবে প্রচার চালানো হবে, জনসভার কত লোক থাকতে পারেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে।আশা করছি রাজনৈতিক দলগুলি তা মেনে চলবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement