উপত্যকা এখনও অন্ধকারে, রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক ওমরের

আজ রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৭
Share:

ছবি: পিটিআই।

কাশ্মীরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নির্দেশিকা ও তার জেরে অনিশ্চয়তা এ দিনও বজায় রইল। কী হতে চলেছে তা বুঝতে না পেরে রীতিমতো অস্বস্তিতে রয়েছেন আম কাশ্মীরি।

Advertisement

আজ রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। তার পরে ওমর বলেন, ‘‘কেন্দ্র কেন অমরনাথ যাত্রী আর পর্যটকদের কাশ্মীর ছেড়ে যেতে বলল তা নিয়ে সংসদে ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। সরকার সংসদে ব্যাখ্যা

দিলে তবেই দেশবাসী গোটা বিষয়টি বুঝতে পারবেন। সরকারের বিভিন্ন নির্দেশ আলাদা আলাদা ভাবে দেখলে তার এক রকম অর্থ হচ্ছে। কিন্তু সব নির্দেশ একসঙ্গে পড়লে নানা প্রশ্ন উঠছে।’’ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন ওমর এবং ফারুক আবদুল্লা। কিন্তু ওমরের দলের দাবি, তখন কাশ্মীরে কেন্দ্রের পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু জানাননি। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের অবশ্য দাবি, অনর্থক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছুই ঘটেনি।

Advertisement

অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে যাত্রীদের কাশ্মীর ছেড়ে যেতে বলেছে সরকার। এ ভাবে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করার নজির বিশেষ নেই বলেই জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পাশাপাশি কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। ফলে উপত্যকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

আজ গাড়ি ভর্তি করে শ্রীনগর ও কাশ্মীরের অন্যান্য শহর ছেড়ে যেতে দেখা যায় পর্যটকদের। গত কাল উপত্যকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন শ্রীনগরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’-র বেশ কয়েক জন পড়ুয়াও। বিমানবন্দরে ভিড় জমান দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বুকিং পাননি।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শ্রীনগর-দিল্লি পথে বিমানভাড়া ৩ হাজার টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজারে। অন্য দিকে শ্রীনগর-জম্মু পথে ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে

১৬ হাজারে।

আতঙ্কের জেরে এ দিনও শ্রীনগর-সহ কাশ্মীরের বিভিন্ন শহরের পেট্রল পাম্প, এটিএম, দোকানে ভিড় জমান মানুষ। সব দোকানপাট খোলেনি। রাস্তায় গাড়িও ছিল কম।

কেন্দ্র তথা জম্মু-কাশ্মীর সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির

হামলার সম্ভাবনা বাড়ার ফলেই উপত্যকায় জরুরি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। গত কাল সেনার তরফে পাকিস্তানি মাইন ও স্নাইপার রাইফেল দেখিয়ে দাবি করা হয়েছে, অমরনাথ যাত্রা ও কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ভন্ডুল করতে চাইছে পাকিস্তান। কিন্তু সেই যুক্তি পুরোপুরি মানতে রাজি নন কেউই। এ দিনও গুলমার্গ ও পহেলগামের হোটেল থেকে পর্যটকদের চলে যেতে অনুরোধ করেন প্রশাসনিক কর্তারা।

শ্রীনগরের জাহাঙ্গির চক এলাকায় ফল বিক্রি করেন মহম্মদ আক্রম। সাফ বললেন, ‘‘কী হতে যাচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রতিদিন আমাদের সমস্যা বাড়ছে।’’ আজ বিকেলে কিছু বিক্রি করেননি আক্রম। জানালেন, সরকারের নির্দেশিকা আসার পরেই আর ফল কেনেননি। আমিরা কাডাল সেতুর উপরে মাছ বিক্রি করেন

রাজা। বললেন, ‘‘৪০ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছি। মানুষকে এমন ভয় পেতে কখনও দেখিনি।’’ শ্রীনগরের সরকারি স্কুল থেকে বেরোনোর সময়ে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী রিফাত জহান বলল, ‘‘বাড়িতে বাবা-মা জিনিসপত্র কিনে রাখছে। কিন্তু কেন রাখছে

জানি না।’’

কাশ্মীর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে এক বিবৃতিতে

বলা হয়েছে, ‘‘জল্পনা ছড়িয়ে উপত্যকার মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করে দেওয়া হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement