প্রতীকী চিত্র।
৪ বছরের বাচ্চা মেয়ে। প্রতিবেশী ৮১ বছরের মহিলাকে ডাকত ‘দাদি’ বলে। এবং তার ৮৭ বছরের স্বামীকে বলত ‘দাদা’। ২০১৩ সালের এক দুপুরে এই দাদু-ঠাকুমার বয়সিদের হাতেই যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। সেই মামলায় সম্প্রতি রায় দিয়েছে বিশেষ আদালত। পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মুম্বইয়ের ওই ২ বয়স্ককে। তাদেরকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
এই রায় নিয়ে বিশেষ বিচারক রেখা এন পান্ধারে জানিয়েছেন, আদালত পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, নির্যাতিতা এক জন শিশু। অভিযুক্তরা তার দাদুর বয়সি। অভিযুক্তদের উচিত ছিল নির্যাতিতার রক্ষণাবেক্ষণ করা। বদলে তারা শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করেছে। এ জন্য প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো) আইনের ৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ওই প্রৌঢ় দম্পতিকে। ১০ বছরের জেল ছাড়াও দোষী ২ জনকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৫০ হাজার টাকা করে দিতে হবে বাচ্চাটিকে।
২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর এই যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছিল। সে দিন সকাল ১০টায় স্কুল থেকে ফিরে খাবার খেয়ে কার্টুন দেখছিল শিশুটি। দুপুরে বন্ধুর সঙ্গে খেলার জন্য আবাসনের পাঁচতলায় যায় শিশুটি। তখন তার বন্ধু ঘুমাচ্ছিল। তাই সে নিজেদের ফ্ল্যাটেই ফিরে আসছিল। সে সময় অভিযুক্ত বৃদ্ধ ডাকে তাকে। দাদুর ডাকে বিশ্বাস করেই সে দিন তাদের ঘরে ঢুকেছিল বাচ্চাটি। কিন্তু তখনও সে জানত না, কী ঘটতে চলেছে তার জীবনে।
পুলিশকে দেওয়া বয়ানে নির্যাতিতা শিশুটি জানিয়েছিল, অভিযুক্ত বৃদ্ধ ঘরে যাওয়ার পর দোলনায় বসিয়ে দেয় তাকে। কিন্তু সেখানে দোল খাওয়ার পর বাড়ি আসার চেষ্টা করতেই তাকে চড় মেরেছিল বৃদ্ধ। বেরিয়ে আসার চেষ্টার সময় ওই বৃদ্ধা তার হাত চেপে ধরে। যৌন নির্যাতনের আগে বৃদ্ধ তার পোশাক খুলেছিল। বৃদ্ধা তাতে সাহায্য করেছিল। সেই সময় আতঙ্কে জড়সড় হয়ে ছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছিল সে। অত্যাচারের পর জামা-কাপড় পরে চুপিচুপি বাড়ি চলে যায় সে।
শিশুটির মা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ওই দিন রাতের খাবার খাওয়ার পর মেয়েকে শোয়াতে নিয়ে যান তিনি। সে সময় শিশুটি তার মাকে জানায়, সে কিছু বলতে চায়। কিন্তু তাকে যেন বকা না হয়। ধমক না খাওয়ার আশ্বাস পেয়ে দুপুরে ঘটা গোটা ঘটনা মাকে জানায় সে। শিশুটির মা জানিয়েছেন, মেয়ের কাছে ঘটনার কথা শোনার পরই বাচ্চাটির গোপনাঙ্গ দেখেন এবং সেখানে প্রদাহ দেখতে পান। এর পর দিন বাচ্চাটির মা-বাবা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই মামলার রায়েই সাজা হল ওই বৃদ্ধ দম্পতির।