ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। কোনও থানা এলাকায় যদি গরু পাচারের মতো ঘটনা ঘটে, সেই থানার ওসিকে বরখাস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, কোনও থানার কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যদি মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে, সে ক্ষেত্রেও রেয়াত করা হবে না থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে।
এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, রাজ্যবাসী নিজেদের হাতে আইন তুলে নিলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে। গত কয়েক মাসে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রঘুবর দাস। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটা স্বঘোষিত গোরক্ষকদের তাণ্ডব, গোমাংস বহন করার অভিযোগে মাংস ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে মারার ঘটনা রাজ্য প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। যে ভাবে রাজ্যবাসী কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিচ্ছেন সেটা বন্ধ করতে তত্পর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, প্রতিটি থানা এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ডিআইজিদের সপ্তাহে এক দিন করে হঠাত্ পরিদর্শনে যেতে হবে। পাশাপাশি, পুলিশ সুপাররাও প্রতি দিন অন্তত দুটো করে থানায় যাবেন কাজের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে। কাজে গতি আনতে পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই মুসলিম পরিবারকে রড-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মার
গত মাসেই রাজ্যের রামগড় জেলার বাজারটাঁড়ে আসগার আলি ওরফে আলিমুদ্দিন নামে এক মাংস ব্যবসায়ীকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে গোরক্ষকরা। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামগড় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বেশ কয়েক দিন ধরে তাণ্ডব চলে সেখানে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাফ নামানো হয়। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশজুড়ে গোরক্ষকদের তাণ্ডব নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। গো-রক্ষার নামে নিরীহ মানুষকে খুন করার ঘটনা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও ঝাড়খণ্ডে এক মাংস ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে মারে গোরক্ষকরা। মোদীর কড়া বার্তার পর মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসও বিষয়টি নিয়ে চরম বার্তা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই বার্তার পরেও রাজ্যে এমন ঘটনায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিতে রাশ টানতে তাই এ বার পুলিশ প্রশাসনকে আরও কড়া বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন দায়িত্বে কোনও রকম গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না।